ভোলায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলমের মৃত্যুর ঘটনায় জেলা বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। হরতাল শুরুর ছয় ঘণ্টা পর জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলা জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘সরকারের উপরের নির্দেশ না থাকলে পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা কোনো অ্যাকশন আজ পর্যন্ত আমরা লক্ষ করিনি।’ এ সময় তিনি ওই দিনের ঘটনায় নিহত ও আহত পরিবারের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন। এ ঘোষণার পর জেলা সড়কে দোকানপাট খুলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে একই ঘটনায় নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিমের স্ত্রী ও সন্তানদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।
বিএনপির ভোলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির শোপান বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মিছিল করেছে।
এদিকে, হরতালের কারণে শহরের মহাজনপট্টি সদর রোড, বিএনপির কার্যালয় এলাকায় সকাল থেকে অধিকাংশ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। জেলার সড়কে যান চলাচল কম করতে দেখা গেছে। তবে ভোলা-চরফ্যাশন রুটে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে। এছাড়া যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের প্রধান কয়েকটি স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গত রোববার পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নূরে আলম গুলিবিদ্ধ হন।
ওই দিনই রাজধানীর কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে বুধবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে নূরে আলম মারা যান। তিনি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। চলমান লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিএনপির দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত রোববার ভোলায় জেলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন দলটির নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা কালীনাথ রায় বাজারে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে পুলিশ গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম নিহত হন এবং দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে জেলা ছাত্রদল সভাপতি পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।