নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের কোনও সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার (১০ আগস্ট) দলটির দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্য উসকানিমূলক ও মিথ্যা অপপ্রচার দাবি করে বিবৃতিতে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলছেন আওয়ামী লীগ সরকারের নাকি বিদায় নেওয়ার সময় এসেছে! গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত একটি সরকারের বিরুদ্ধে এ ধরনের বক্তব্য শুধু সংবিধান পরিপন্থিই নয়, গণতন্ত্রের নীতিবহির্ভূতও বটে। গণতন্ত্রের প্রতি হুমকিস্বরূপ। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের কোনও সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস হলো এ দেশের জনগণ এবং ক্ষমতা দেওয়ার মালিক মহান আল্লাহ্।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মতো জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলের মুখের কথায় জনগণ কখনও আস্থা রাখেনি। বিগত ১৪ বছর লাগাতার বিএনপি নেতারা এ ধরনের কথা এবং আন্দোলনের হাঁকডাক দিয়েই চলেছে। কিন্তু এ দেশের জনগণ বিএনপির ডাকে সাড়া দেয়নি। কারণ, জনগণ ভুলে যায়নি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাবস্থায় দেশবাসীকে কী ধরনের দুঃশাসন ও অপশাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয়েছিল।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির ব্যর্থতা বাংলাদেশকে চরম অনিশ্চয়তা ও দুরবস্থার মুখে ঢেলে দিয়েছিল। তারা সরকার পরিচালনায় যেমন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, বিরোধী দল হিসেবেও চরম দায়িত্বহীনতার নজির স্থাপন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নয়; বরং নেতিবাচক রাজনীতি ও নির্বাচনবিমুখতার জন্য বিএনপির রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলো মিটিং-মিছিল সভা-সমাবেশ করছে। অথচ তারা অভিযোগ করছে তাদের সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক অধিকার থেকে নাকি বি ত করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, নিজেদের ব্যর্থতা ও নানা অপকর্মের দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করা বিএনপির চিরাচরিত অভ্যাস। মিথ্যার মোড়কে লুকায়িত তাদের অগণতান্ত্রিক রাজনীতির স্বরূপ জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট। তাদের শাসন আমলেই তো দেশ মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ধর্মীয় উগ্রবাদ, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছিল বিএনপির আমলে। সার ও বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছিল। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভয়াবহ ও নিকৃষ্টতম নজির স্থাপন করেছিল। আবারও তারা দেশকে সেই অরাজকতায় ডুবিয়ে দিতে চায়। কিন্তু জনগণ বর্ণচোরা বিএনপিকে চেনে। সুতরাং সে সুযোগ জনগণ আর তাদের দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল। কারণ, গত চার দশক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি সব সংকট ও চ্যালেঞ্জ জয় করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ দেশের জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। এ দেশের যা কিছু মহৎ অর্জন এবং সংকট জয়ের সাফল্য তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় জনগণের আশা, আকাঙ্ক্ষা, ভরসা ও বিশ্বাস।’
আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াবহ অভিঘাতের মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা সংকট দেখা দিয়েছে এবং আমাদের জনজীবনেও তার অনাকাঙ্ক্ষিত ঢেউ লেগেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ধৈর্য ও দায়িত্বশীল আচরণ করলে অতীতের মতো সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ভিশনারি ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বৈশ্বিক এই সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো। জয় আমাদের হবেই।’