সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:১১ অপরাহ্ন

টানা বসে থেকে কোমর ব্যথা, কী করবেন?

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২

অনেকেই আছেন যারা দিনের ১২-১৪ ঘণ্টা কাটিয়ে দেন অফিসঘরে। বাংলাদেশের ব্যাংকারদের উপর পরিচালিত একটি গবেষণা জানাচ্ছে যে, যারা বেশি সময় অফিসে বসে কাজ করেন তাদের ঘাড়, কোমর, হাটু বা কাঁধ ব্যথা হবার প্রবণতা যারা কম সময় বসে থাকেন তাদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। এক কথায় যাকে বলা যায় অফিস সিনড্রোম।
অফিসে টানা বসে থেকে কোমর ব্যথা থেকে উপশমের উপায় নিয়ে লিখেছেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফিজিওথেরাপি বিভাগীয় প্রধান ডা. মোহাম্মদ আলী।
মানুষ জন্মগত ভাবেই নড়াচড়া প্রবণ জীব। মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই আহার সংগ্রহে মানুষ শারীরিক শ্রম দিত। একটি শিকার করতে আমাদের পূর্ব পুরুষরা বিপুল শারীরিক শক্তি ব্যয় করত। কিন্তু আমাদের আধুনিক জীবন অনেকটাই মেধা নির্ভর। চেয়ার- টেবিল বা কম্পিউটার-মোবাইলের সামনে বসেই বেশিরভাগ সময় কাটে আমাদের। ফলশ্রুতিতে হাড়-মাংসপেশিতে আসে জড়তা। বাইরে সূর্যের আলোতে কম আসাতে আমাদের শরীরে দেখা দেয় ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি। সব মিলিয়ে স্থবির থাকতে থাকতে আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মাংসপেশি ও হাড়ের জড়তা প্রকাশ পায় ব্যথার মাধ্যমে। হাড়ের ক্ষয়, মাংসপেশির দূর্বলতাজনিত ব্যথা জেকে বসে আমাদের শরীরে।
একসময় ভাবা হত যারা ভারি কাজ করেন, অস্বস্থিকর ভঙ্গিমায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকেন কেবল তাদেরই ঘাড়-কোমর ব্যথা বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু আধুনিক কালের গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা; প্রকৃতপক্ষে যারা দীর্ঘ সময় একই ভংগিমায় কাজ করেন তাদেরই ব্যথাজনিত শারীরিক সমস্যা বেশি হয়। অনেকেই ভাবেন, খুব আধুনিক চেয়ারে বসে ১২-১৪ ঘণ্টা টানা কাজ করলেও ঘাড় বা কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হবার সম্ভবনা নেই। বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়; আসলে আপনি একই ভংগিমায় কতক্ষণ কাজ করলেন সেটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অর্থাৎ ভংগিমা যে কোন রকম হতে পারে, ব্যথামুক্ত থাকার শর্ত হলো সেই ভংগিমায় বেশিক্ষন থাকা যাবে না।
পরিত্রাণের উপায় কী
প্রথম শর্ত হলো, একভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা যাবে না। প্রতি একঘন্টায় এক মিনিটের জন্য হলেও পজিশন পরিবর্তন করতে হবে। সুযোগ থাকলে হালকা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। কিছু খুব সাধারণ অথচ বিশেষ ব্যায়াম আছে যা অফিসের চেয়ারে বসেই করা যায়, সেগুলো জানতে হবে। যারা ইতোমধ্যেই ব্যথায় আক্রান্ত তারা বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।
দ্বিতীয়ত, আপনার মোবিলিটি বা নাড়াচাড়া বাড়াতে হবে। একটি শ্লোগান মনে রাখা দরকার, ‘সুস্থ থাকতে হাটতে হবে’। অনেকেই অজুহাত দেন যে তাদের হাটার সময় নেই। কিন্তু আপনি চাইলেই হাটতে পারেন। যেমন ধরুন অফিস থেকে বাসায় ফিরতে যেটুকু রাস্তা রিক্সায় আসেন সেটুকু আজ থেকে হেটে আসুন অথবা সাধের প্রাইভেট কারটা গ্যারেজে রেখে হেটে অফিস করুন, দেখবেন অর্থও সাশ্রয় হচ্ছে সাথে ভালো থাকছে শরীর ও মন।
পরিশেষে, প্রায়ই বেরিয়ে পড়ুন এডভেঞ্চারে। হাতে সময় কম থাকলে আশেপাশের টুরিস্ট স্পট ভিজিট করুন। সাঁতার কাটুন, দৌড়ান বা হিল ট্রাকিং করুন। শারীরিকশ্রমের সাথে সাথে পাবেন সূর্যের ভিটামিন ডি। মনে রাখুন, আমাদের পূর্বপূরুষদের সবকিছুই ছিলো শারীরিক শ্রম নির্ভর। আপনিও এই জেনেটিক্সের বাইরের কেউ নন!




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com