জহির রায়হান এর উপন্যাস “বরফ গলা নদী” ১৯৬৯ সালে প্রকাশ পায় বলে প্রকাশ পায় বলে মনে করা হয়। উন্যাসটি অনুপম প্রকাশনী থেকে প্রকাশ করা হয়।প্রথমে অনুপম সংস্করণ করে জানুয়ারী ১৯৯৮ আর অষ্টম মুদ্রণ হয় এপ্রিল ২০১৯ সালে। উপন্যাসটির মূল্য ১৪০ টাকা।উৎসর্গ করা হয়েছে কাইয়ুম চৌধুরী বন্ধুবরেষু। জহির রায়হানের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ আগষ্ট ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে করেন কলকাতা থেকে।আর হাই স্কুল শেষ করেন ফেনীর আরিমাবাদ থেকে।কলকাতায় একটি পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়।১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন।১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ সম্মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন ১৯৫৬ সালে।তার প্রথম চলচ্চিত্র “কখনো আসেনি” মুক্তিলাভ করে ১৯৬১ সালে।ছাত্রজীবনে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ “সূর্যগ্রহণ” প্রকাশিত হয়।১৯৬৪ সালে তার “হাজার বছর ধরে” উপন্যাসটির জন্য তিনি আদমজী পুরস্কার লাভ করে।১৯৭০ সালে মুক্তিলাভ করে তার পরিচালিত “জীবন থেকে নেয়া” চলচ্চিত্র ।১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি বড় ভাই শহিদ সাংবাদিক – ঔপন্যাসিক শহীদুল্লা কায়সারকে খুজতে গিয়ে তিনি নিখোজ হন। ১৯৭২ সালে জহির রায়হানকে বাংলা একাডেমী পুরস্কার দেয়া হয়।
#বরফ গলা নদী উপন্যাসটির চরিত্র সমূহ: *হাসমত আলী *সালেহা বিবি *মরিয়ম *হাসিনা *দুলু
*খোকন *মাহমুদ *লিলি *সেলিনা *আনিসা বেগম * মনসুর *শাহাদাত *আমেনা *রফিক *নঈম
#চরিত্র গুলোর সম্পর্কের পরিচয়:*হাসমত আলী=তিনি একজন সাধারন কেরানি ছিলেন(হাসমত আলী+ সালেহা বিবি স্বামী/স্ত্রী) *সালেহা বিবি= পাঁচ সন্তানের মা *মরিয়ম=( শিক্ষিত,বুদ্ধিমতী, ভালোবাসাময়ী,যদিও ভালোবেসে একবার দুঃখু পেয়েছে) *হাসিনা=( চনচ্চল স্বভাবে, অল্প কিছু দিলে অনেক খুসি হয়ে যায়,অনেক বেশী কথা বলে) *দুলু/খোকন=(এদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যাই না)
*মাহমুদ=(নিজের চেষ্টাই পড়া লেখা করেছে, একটু বেশী রাগী,প্রেম হীন ব্যাক্তি) *মরিয়ম,হাসিনা,দুলু/খোকন=(এরা সবাই ভাই বোন) *লিলি=(মরিয়ম এর বান্ধবী,শিক্ষিত,একটি স্কুলে চাকরী করে) *সেলিনা=(মরিয়ম এর ছাত্রী) *আনিসা বেগম=(সেলিনার মা) *মনসুর=(সেলিনার বড় বোনের দেবর) *শাহাদাত/রফিক/নঈম=(মাহমুদ এর বন্ধু) *আমেনা=(শাহাদাতের স্ত্রী)
উন্যাসটির কাহিনীর সারসংক্ষেপ:এটি একটি দরিদ্র অভাব অনাটনের পরিবারের গল্প ।হাসমত আলী সাধারণ একজন কেরানী সুতরাং তার বেতন ছিল অল্প।তার সন্তানদের পড়াশোনার খরচ ঠিক মতো সে চালাতে পারতো না।তার স্ত্রী সালেহা বিবি একজন সাধারন গৃহিনীর মতো কাজ করতো।তাদের তিন কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান ছিল।মরিয়ম ছিল বড় কন্যা তার পর হাসিনা এবং ছোট কন্যা ছিল দুলু।আর বড় ছেলে মাহমুদ আর ছোট ছেলে খোকন।মরিয়ম কিছুটা শান্ত স্বভাবের তার মা ছালেহা বিবির মতো।মরিয়ম অনেক কস্টে ইন্টারমেডিট পাস করেন।চাকরীর জন্য বিভিন্ন জায়গাই ইন্টারভিউ দিয়েছে মরিয়ম। কিন্তু কই চাকরী পাচ্ছিল না।মরিয়ম একটি সেলিনা নামে একটি মেয়েকে পড়াতো।সেখানে সেলিনার বোনের দেবর মনসুর রোজ আসতো এবংমরিয়ম এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করতো।সুতরাং মনসুর মরিয়মকে পছন্দ করোত।মরিয়মের জীবনে একটি কালো অধ্যায় ছিলো তা হলো তা হলো মরিয়ম জাহিদ নামে একটি ছেলে ভালোবাসতো।তার সাথে পালিয়ে যাই একটি হোটেলে কিছুদিন থাকে। কিন্তু যখন টাকা শেষ হয়ে যাই তখন জাহিদ মরিয়মকে ছেরে চলে যাই।মরিয়ম আবার নতুন করে জীবন শুরু করে।আর হাসিনা ছিলো ঔরুন্ত স্বভাবের অল্প কিছুতে সে ব্যাপক খুশি হয়ে পরতো।তারা সবাই একটি সাধারণ পুরাতন একতলা বিশিষ্ঠ্যি বাড়িতে বসবাস করতো। বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পরেতে থাকে।হাসিনা আট ক্লাসে পরতো।
হাসিনা সারাদিন পুরাতন ছাদে খেলতো। আর হাসিনা কখনো কখনো কাপড়,হাড় ছোট ছোট জিনিস মরিয়মের কাছে আবদার করতো। দুলু ছোট ছোট পুতুল নিয়ে খেলতো। খোকন স্কুলে পড়তো।মাহমুদ একটি খবরের কাগজের সম্পদনার জন্য ছোট একটি পোষ্টে কাজ করতো।খুব অল্প বেতন পেত সংসারে দিত এবং নিজের লেখা-পড়ার খরচ চালাতো।মাহমুদ কিছুটা রাগচটা ছিলো।মরিয়ম একদিন তার বান্ধবী লিলিকে বাসাই নিয়ে আসে তখন মাহমুদের সাথে লিলি দেখা হয়।আর মাহমুদ রোজ একটি চায়ের দোকানে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতো। সেই খোদা বাক্স চায়ের দোকানে রফিক ও নঈম থাকতেন এবং সবাই মিলে আড্ডা মারতো।তারা সবাই চাকরী খুজতে ছিলো ।আর শাহদাত ছিলো মাহমুদের কাছের ফ্রেন্ড এবং সত্যবাদী লোক।একটা সময় নানা ঘটনা প্রেক্ষাপটের পর মরিয়ম আর মনসুরের বিবাহ হয়।কিন্তু তাদের সংসার বেশীদিন ভালো গেলো না কারন হঠাৎ মনসুর জাহিদের সম্পর্কে সব জানতে পারে।আর মাহমুদ চাকরী ছেড়ে অন্য চাকরী খুছতেছিলো।লিলি একদিন তার মামতো ভাই তসলিম কে সাথে নিয়ে ময়িমদের বাড়িতে সাবার একক ছবি তোলবে বলে।সেখানে হাসিনার সাথে তসলিমের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে দুষ্টু মিষ্ট সম্পর্ক হয়। বৈশাখ মাসের শেষে দিকে প্রচুর বৃষ্টি পাত শুরু হয়। সেই দিন মাহমুদ একটা কাজের জন্য বাড়ি বাইরে থাকে। প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে সেই রাতে তাদের একতলা বিশিষ্ঠ্য বাড়ি ভেঙ্গে যাই মরিয়ম,হাসমত আলী,সালেহা বিবি,দুলু,খোকন,হাসিনা মারা যাই।শুধু মাহমুদ বেচে যাই । আর কাহিনীর শেষের দিকে মাহমুদ আর লিলির সাথে সংসার বাধে তাদের একটা মেয়ে হয়। আর মনসুর সেলিনাকে বিবাহ করে। আর তসলিম একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক জরিয়ে পড়ে কিন্তু তার কোন ভবিষৎ ছিলো না। সুতরাংগল্পটি সামাজিক ব্যবস্থার দরিদ্র নিপীড়ন মানুষের সাথে সম্পর্কিত। সূত্র: সংকলিত