বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধুরিয়াইল ও সমদ্দারপাড় পর্যন্ত প্রায় (৪) কিলোমিটার মাটির রাস্তার অংশে,বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই কাঁদা মাটির রাস্তায়।(৫০) বছর ধরে দুর্ভোগের চরমসীমা পোহাচ্ছে এখানকার মানুষ।এতে করে প্রতিদিন চলাচলে ব্যহত হচ্ছে, চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, রোগীসহ এখানকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করনে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উল্লেখ্য গুরুত্বপুর্ণ রামসিদ্ধি বাজার থেকে মুজিব বাজার হয়ে, ধুরিয়াইল ও সমদ্দারপাড় গ্রামের মানুষ, মাটির এ রাস্তাটিতে সংস্কার বা উন্নয়নে বছরের পর বছর স্থানীয় গ্রামবাসী আশারবাণী শুনে আসছেন। ধুরিয়াইল ও সমদ্দারপাড় ধানডোবা, গ্রামের পাশেই আগৈলঝাড়ার পাশ^বর্তী রাজিহার ইউনিয়নের চেংঙ্গুটিয়া গ্রামসহ গুরুত্বপুর্ণ এই রাস্তায় চলাচলে ৫টি গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ, মুজিব বাজার, ধুরিয়াইল ও সমদ্দারপাড় গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় স্বাধীনতার পর গত অর্ধশত বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া তো দুরের কথা কোন কাচা পাকা কাজ হয়নি।গ্রামগুলোতে কমপক্ষে (১২) হাজারেরও বেশী লোকের বসবাস।গ্রামে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবি,ব্যবসায়ী,কৃষকসহ অনেক শিক্ষার্থী।বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি খানাখন্দ হয়ে ব্যবহারে পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রতিদিন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সময় অটোরিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইকসহ ছোট বড় যানবাহন চলাচল একবারে বন্ধ হয়ে যায়, হেটে যাতায়াত করা ও খুব মুশকিলে পরতে হয় গ্রামবাসীকে। ধুরিয়াইল গ্রামের ব্যবসায়ী, মোঃ জালাল নুর ফরাজী বলেন, জি,এম হেদায়েত প্রমূখ। তারা জানান উল্লেখিত গ্রামগুলোর অধিকাংশ বাসিন্দাই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্ভর করেন।কাছাকাছি থাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি ও খুচরা টরকীর বাজারে, উল্লেখিত ৫টি গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করছেন প্রতিদিন। কৃষক ফিরোজ গাজী ও মিরাজ গাজী জানান, রাস্তাটি মাটির হওয়ায় খানাখন্দ হয়ে চলাচলে অসুবিধার কারনে উৎপাদিত পন্য বাজারে নিয়ে যেতে শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল হতে হয়।এজন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের।বর্ষার পুরো সময়ই রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী থাকায় অসুস্থ রোগী,বয়স্ক লোকজন কিংবা গর্ভবতী মহিলাদেরও অবর্ণনীয় দৃর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কখনো জরুরি প্রয়োজনে অটোরিকসা ও ভ্যান নিয়ে রোগীদের বহনে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। তাছাড়া বেশির ভাগ সময় রাস্তা খারাপ থাকায় সময় মতো কোন রিকসা ভ্যান পাওয়া যায়না। ধুরিয়াইল গ্রামের রতন বাড়ৈ নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, এ রাস্তা দিয়ে পাশের গ্রামের অবস্থিত চাঁদশী ইশ্বর চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়,আমি ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বর্ষায় অতিরিক্ত কাদা হয়, একারনে এরাস্তা দিয়ে চলাচল করার মতো কোন অবস্তা থাকেনা তাই প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে পারিনা লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটে।তাছাড়া এ গ্রামে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও গির্জাসহ সরকারি বেসকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি সময় উপযোগী সংস্কার না হওয়ায় কার্যত সবকিছুতেই স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এবিষয়ে কথা হয় বার্থী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ রাজ্জাক হাওলাদার এর সাথে তিনি বলেন রামসিদ্দি বাজার থেকে বিএনপি বাজার পর্যন্ত পাকা করন এর কাজ জুলাই মাসের ২১ তারিখে টেন্ডার হওয়ার কথা ছিলো কি কারনে তা আবার বিলম্বনা হলো ঠিক বলতে পারবোনা তবে আশা করছি এবছর নাগাত পাকা হয়ে যাবে।তিনি আর বলেন,ধুরিয়াইল বিএনপি বাজার থেকে সমদ্দারপার পর্যন্ত যাতায়াতে পথ মধ্যে দুটি ব্রীজসহ কাঁচা-মাটির রাস্তাটির খুবই খারাপ অবস্তা,চলাচলের অনুপযোগী হয়ে থাকে বর্ষাকালে।যেহেতু আমার নির্বাচনী ও নিজ এলাকা যত সম্ভব আমি চেষ্টা করবো। আমার রাজনৈতিক অভিভাবক এই অঞ্চলের এমপি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ কাছে এই ধুরিয়াইল ও সমদ্দারপাড় গ্রামের মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের কথা জানানোসহ যতদ্রুত মাটির রাস্তাটি পাকা করন করা হয় সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। সাবেক ইউপি সদস্য গনেশ বাড়ৈ বলেন দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি, রাস্তাটি সংস্কার হবে, কিন্তু ওই শোনা পর্যন্তই, সংস্কার আর হয় না, আমি ইউপি সদস্য থাকাকালীন সময়ে সংস্কারের অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি, জনগনের কাছে দেওয়া নির্বাচনী ওয়াদা রক্ষা করতে পারিনাই। ফলে যুগ যুগ ধরে এই রাস্তা ব্যবহার করা হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ নিয়ে(৫০) বছর অতিবাহিত করেছে। কথা হয় সমদ্দারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমল ভদ্র খুব আক্ষেপ করে বলেন দীর্ঘ ৩২বছর ধরে বিদ্যালয়ে চাকুরী করছি, বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়, এই কাঁদামাটির রাস্তায় রিকক্সা ভ্যান কিছুই না আসায় বিদ্যালয়ের মালামাল বহনে দুর্ভোগ পোহাতে হয়,স্থানীয় অনেকেই নাম গোপন রাখা শর্তে বলেন বিএনপি ক্ষমতায় থাকা কালীন এই রাস্তার সংস্কারের কোন উদ্যোগ বা কাজ করেনি চারদলীয় জোট। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর এই অঞ্চলের (১) আসনের এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, একাদিকবার রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে ও সংস্কার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর কারন আমাদের ধুরিয়াইল গ্রামের আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী দুই নেতা, এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ও গ্রুপিং এর কারনে এরাস্তা পাকা সংস্কারের কাজ হওয়া সম্ভব ও বাস্তবায়িত হয়ে উঠেনি। স্থানীয় এমপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উল্লেখিত গ্রামগুলোর মানুষের প্রানের দাবি যত দ্রুত সম্ভব রামসিদ্ধি বাজার থেকে, মুজিব বাজার হয়ে ধুরিয়াইল-সমদ্দারপাড়,মাটির কাচা রাস্তাটি পাকা সংস্কার করে জনদুর্ভোগের লাগব থেকে মুক্তি চায়, এমনটা’ই আশা ব্যক্ত করেছে স্থানীয়’রা।