সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

আন্তরিক-মানসম্মত চিকিৎসায় বদলে গেছে মেঘনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২

কুমিল্লার মেঘনা একটি চর অধ্যুষিত উপজেলা। এই অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাই এখানকার ৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্ত বিগত কয়েক বছর আগেও নাজুক অবস্থা ছিলো হাসপাতালটির। ছিলো না পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসার সরঞ্জামাদি। ভেতর ও বাইরের পরিবেশ ছিলো নোংরা-অপরিচ্ছন্ন। এখনকার চিত্র সম্পূর্ন ভিন্ন। পাল্টে গেছে চিকিৎসা সেবার মান। আছে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম । দীর্ঘদিনের সমস্যা কাটিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছন্ন পরিবেশে স্বাস্থ্য সেবা নিতে প্রতিদিনই আসে কয়েক শতাধিক স্থানীয় সাধারণ মানুষ। হাপাতাল সেবায় বেশ খুশি তারাও। নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মানে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। মূলত বর্তমান মেঘনা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জালাল হোসেন হাসপাতালটিতে যোগদানের পরই আমূল পরিবর্তন করেন হাসপাতালের চিকিৎসা ও সার্বিক পরিবেশের। তিনি ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি এখানে যোগদান করেন। তার নানা উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় হাসপাতালটির দৃশ্যপট পাল্টে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের আউটডোরে আছে দুটি টিকিট কাউন্টার। সামনে সেবাপ্রত্যাশী মানুষের ভিড়। হেল্পডেস্কের সামনেও ভিড়। রোগীদের সুপেয় পানির সমস্যা নিরসনে বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও অন্তঃবিভাগে আধুনিক ও মানসম্মত পানির ফিল্টার স্থাপন করা হয়েছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ২৯ শয্যা বিশিষ্ট ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, পালস অক্সিমিটার, কার্ডিয়াক মনিটর, নেবুলাইজার, সাকার মেশিনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির মাধ্যমে করোনা রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে এখানে। হাসপাতালে দালালদের দৃশ্যমান তৎপরতা নেই। নেই ওষুধ কোম্পানির লোকজনের অবাধ উপস্থিতিও। ঔষধ কোম্পানীর লোক হাসপাতালে ঢুকতে পারেন সপ্তাহে তিন দিন, তা-ও বেলা একটার পরে। গোটা হাসপাতাল সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। রয়েছে অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র। জানা যায়, ২০০৬ সালে প্রতিষ্টিত মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়েও এখন রোগীরা আন্তরিকতাপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ২৫ জন চিকিৎসক ও ২৩ জন সেবিকা(মিডওয়াইফ সহ) জরুরী ও বহির্বিভাগে নিয়মিত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। উপজেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রতিদিন কমবেশী প্রায় ৪০০ জন এবং জরুরী বিভাগে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকে। এছাড়াও অতিসম্প্রতি সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হওয়ার পর প্রতিমাসে কমবেশী প্রায় ২০ থেকে ২৫টি সিজার অপারেশন করা হয়। নরমাল ডেলিভারী করা হয় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন গর্ভবতী মায়ের। তাছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে ২৪ ঘন্টা হাসপাতালে ডেলিভারীর ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সুন্দর পরিবেশ ও সেবার কারণে বেড়েছে রোগীর পরিমাণ। উপজেলার চালিভাঙ্গা গ্রামের হাফেজ মাসুদ মিয়া জানান, তার স্ত্রী ও শালী হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি আছে । তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতাল থেকে পাচ্ছেন। চিকিৎসক ও নার্সরা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। চিকিৎসা নিতে আসা হিমেল শিকদার বলেন, হাসপাতালটিতে এলে মনে হয় কোনো বেসরকারি হাসপাতালে এসেছি। মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জালাল হোসেন বলেন, একটা সময় হাসপাতালে ভালো কোনো চেয়ার-টেবিল ছিল না। ডাক্তারদের রুমের অবস্থাও ছিল একদম সাদামাটা। রোগীদেরও বসার জন্য চেয়ার ছিল না। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে করা হয়েছে আলাদা কেবিন । তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সাংসদ এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসেন স্যার,হাসপাতালের মান উন্নয়নে যথেষ্ট সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। মেঘনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইফুল্লা মিয়া রতন শিকদার বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চেষ্টা করেছি। এখন চিকিৎসা সেবা পেয়ে মেঘনা বাসী খুশি। আর কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অন্যান্য সমস্যা গুলো মাননীয় এমপি মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে অচিরেই সমাধানের চেষ্টা করব।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com