তৃণমূল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যাঁরা নিবেদিত প্রাণ বলে পরিচিত ছিলেন, দলের দুর্দিনে যাঁরা ত্যাগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন, আজ তাঁরাই নিপতিত হয়েছেন চরম দুর্দিনে। বলছি শরিয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক, সিদ্দিকুর রহমান পাহাড় এর কথা। তিনি শরীয়তপুর সদর পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর বালুচরা পাহাড় বাড়ি নামক গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারের সন্তান। আওয়ামীলীগ পরিবারে জন্ম গ্রহন করায়, ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ভালোবেসে জননেত্রী শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে সততা আর সাহসীকতার সাথে নিজের জীবণ বাজি রেখে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন। দলের দুর্দিনে রাজপথের ত্যাগী ও বহু পরীক্ষিত এই সংগ্রামী নেতা সিদ্দিক পাহাড়। বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারনে, সিদ্দিকুর রহমান পাহাড় কে বিএনপি- জামায়াত জোট সরকারের আমলে একাধিক মিথ্যা মামলার আসামী হতে হয়েছে। ২০০৬ সালে, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নির্বাচন অফিস ঘেরাও করতে গেলে উপজেলা চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হয় এই নেতা। একি ঘটনায় তাকে প্রধান আসামী করে, দশজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। যাহা মামলার নং-জি.আর-১৬৩/০৬। এছাড়া বিএনপি ও জামাতের জেলা কার্যালয় ভাংচুর মামলায় সাহসী এ নেতা কে, ৩নং আসামি করা হয়। মামলার নং-জি.আর.- ৩১/০৫। জি. আর.-১১৮/০৮। জামায়াত ও বিএনপি জোট সরকারের দেয়া বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে একাধিকবার কারাভোগ পোয়াতে হয়েছে তাকে। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ওপর অনুসন্ধান চালিয়ে চিরসত্য তথ্য পাওয়া যায়। সিদ্দিক পাহাড় ছাত্র রাজনীতি থেকে, ন্যায়-নীতি,সততা ও স্বচ্ছতার সাথে আওয়ামী লীগের সহযোগী যেসকল সংগঠনগুলোতে দায়িত্ব, কর্তব্য পালন করেছেন। ১৯৮৮ সালে, সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক, শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা, ছাত্রলীগ। ১৯৯৯ সালে, সাবেক ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য,শরীয়তপুর জেলা। ২০০০সালে, সাবেক ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক, শরীয়তপুর জেলা। ২০০২ সালে, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারন-সম্পাদক, শরীয়তপুর জেলা। পুনরায় দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৫ সালে, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারন-সম্পাদক, শরীয়তপুর জেলা শাখা পদে আবারো নির্বাচিত হন। পাশাপাশি ২০১৪ সালে,দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে, শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করেন। স্বার্থবাজ ও সুবিধাবাদী নেতাদের কাছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শুধু সিদ্দিক পাহাড়ই নন, পুরো জেলা জুড়ে তৃনমূল কর্মীবান্ধব নেতারা এখন কোণঠাসা এমন চিত্রই নজরে পড়ে। রাজনীতি নব্য আওয়ামী লীগারদের দখলে চলে গেছে। তাদের দাপটে আন্দোলন-সংগ্রামের সময় রাজপথে থাকা ত্যাগী, নির্যাতিত ও কর্মীবান্ধব নেতারা এখন কোণঠাসা। ভুঁইফোড় সুবিধাভোগীরা বিপুল দাপটে; অর্থ-বিত্ত-ক্ষমতায় তাঁরা পরিপুষ্ট। আর ত্যাগীরা বঞ্চিত-নিপীড়িত; স্বার্থবাজ নেতারা তাঁদের দূরে ঠেলে রেখেছেন। তাঁদের মুখে শুধুই এখন হতাশার সুর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনি কয়েকজন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা খবরপত্র কে জানান, নব্য আওয়ামী লীগারদের কাছে, সুবিধাবাদী নেতাদের কাছে আমরা জিম্মি। তাঁরা আত্মীয়করণ করে পুরো দল দখল করে রেখেছেন। উড়ে এসে জুড়ে বসা নেতাদের মধ্যে দলীয় আদর্শের ছিটেফোঁটাও নেই। পাশাপাশি জামায়াত-বিএনপি থেকে আগত নেতারাই দলে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন। ফলে ছলে-বলে-কৌশলে, কখনো মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে, আবার চাটুকারিতা করে তাঁরা দলীয় পদ-পদবি বাগিয়ে নিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সঙ্গী নেতাকর্মীরা আরো বলেন, তবে আখের গোছানোয় ব্যস্ত নেতাদের অপরাজনীতি একদিন ধ্বংস হবেই। সিদ্দিকুর রহমান পাহাড় বলেন, শৈশব থেকে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সারাজীবন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে দুর্নীতিমুক্ত থেকে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি। আমার রাজনৈতিক জীবনে অন্যায়ের কাছে কখনো আপোষ করিনি। দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে, জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছি। ভবিষ্যতেও যতদিন বেঁচে থাকবো, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরলসভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ্?। বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্তৃক অত্যাচার, জুলুুম ও নির্যতনের শিকার এবং একাধিকবার কারা বরন করলেও রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত জীবনে এখন পর্যন্ত আদর্শচুৎ হননি এই আওয়ামীলীগ নেতা।