সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে তার দ্বিগুণের বেশি কমেছে। এরপরও দুই বাজারেই বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। মূলত বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার। এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস ও তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়ে। এতে টানা ছয় কার্যদিবসের উত্থানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার এবং দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আবার সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়।
অবশ্য দুই কার্যদিবস দরপতনের পর মঙ্গলবার আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে শেয়ারবাজার। পরের কার্যদিবস বুধবার শেয়ারবাজারে সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আবার সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্টের ওপরে উঠে আসে। এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে এমন বড় উত্থান প্রবণতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। বরং লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হয়েছে দরপতনের তালিকা। অবশ্য এর মধ্যেও বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে প্রধান মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৬০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। বাকি দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচক বাড়লেও ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। বাজারটিতে সব খাত মিলে ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৮টির। ১১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৭৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ১৯৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩১৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৬৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ১৮৭ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, মালেক স্পিনিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, ইস্টার্ণ হাউজিং এবং স্কয়ার টেক্সটাইল।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪২টির এবং ৭৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।