নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার তৈরি করতে পারলে বিদেশেও রফতানির ক্ষেত্রে বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব। এতে দেশের সুনাম ও মর্যাদা বাড়বে। আর্থিকভাবেও দেশ লাভবান হবে। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, অনিরাপদ খাবারকে মানুষ খাদ্য মনে করে না। যে খাবার খেয়ে মানুষ নানা রোগে ভোগে তা খাদ্য হতে পারে না। এজন্য কোনো খাদ্য নিরাপদ কিনা- তা ল্যাবে পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকের হাত থেকে ভোক্তার টেবিলে আসা পর্যন্ত যেকোনো সময় খাদ্য অনিরাপদ হতে পারে। এজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। যারা বিদেশে ফুড প্রসেস করে রফতানি করে তাদেরও সচেতন হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আইন প্রয়োগ বা জরিমানা করলেই সবকিছুর সমধান পাওয়া যাবে না, সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গণসচেতনতা। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার আগে মনের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে হবে।’ ল্যাবরেটরি পর্যাপ্ত না হলে মানুষ চাইলেও পরীক্ষা করতে পারবেন না- এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, খাদ্যমান পরীক্ষার জন্য সরকার ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগে ল্যাবরেটরি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া আটটি মোবাইল ভ্যান ল্যাব ও জাইকার সাথে আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজনে অনুষ্ঠানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। ১৬৫ মিলিয়ন মানুষের দেশে সবার কাছে সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। এর জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এছাড়া জনবল, প্রশিক্ষণ মানুষের সচেতনতা নিয়ে কাজ করতে হবে। বিভাগগুলোতে নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষার ল্যাব দ্রুত স্থাপন করা হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, ‘এই এক্সপো আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে এটা একটা বন্ধন হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন সরাসরি আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত। এ কারণে সবার মধ্যে সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কনসার্ন রয়েছেন।’
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল কাইয়ুম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চীফ অব মিশন হেলেন লাফেইভ এসময় উপস্থিত ছিলেন। পরে খাদ্যমন্ত্রী ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল এক্সপোতে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। সরকারি, অ্যাকাডেমিক, গবেষণাভিত্তিক ও বেসরকারি পর্যায়ের ৪৪টি ল্যাব এক্সপোতে অংশ নেয়। ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপোর মাধ্যমে সরকারি ও বাণিজ্যিক ল্যাব বা পরীক্ষাগারের সেবাসমূহ প্রচারের সাথে সাথে জনসচেতনতা গড়ে তোলা এবং পরীক্ষাগারগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন, যোগাযোগ ও সহযোগিতা উৎসাহিত হবে বলে আয়োজকরা মনে করেন।