জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিন হাজার ৪৬১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, বিদেশি ঋণ ৫৮১ কোটি ২০ লাখ এবং বিশ্ব ব্যাংকের অনুদান ২৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবরা শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে একনেক সভায় যোগ দেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প রয়েছে। তার মধ্যে ‘বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্পটি ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ খরচে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটিতে সরকার দেবে ২৬৪ কোটি ৩৩ লাখ এবং ভারতীয় ঋণ ৫৮১ কোটি ২০ লাখ টাকা। ‘দাউদকান্দি-গোয়ালমারী-শ্রীরায়েরচর (কুমিল্লা)-মতলব উত্তর (ছেঙ্গারচর) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পে খরচ হবে ৫২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন সময়ে বাস্তবায়ন হবে। ‘খুলনা সড়ক জোনের আওতাধীন মহাসড়কে বিদ্যমান সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন কংক্রিট সেতু/বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পটি ৫২৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা খরচ করবে সরকার। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে ‘তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চঘাট হতে বরিশাল জেলাধীন বাকেরগঞ্জ উজেলার দুর্গাপাশা রক্ষা’ প্রকল্পে খরচ করা হবে ৭১২ কোটি ১২ লাখ টাকা। তার মধ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পটিতে খরচ হবে ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট’ প্রকল্পে খরচ হবে ৬১ কোটি ৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রজেক্ট (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্পটি ২৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা খরচে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের আগস্টের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
সভায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরাও সভায় অংশ নেন।
এমআইপি/প্রিন্স