রাজধানীর মিরপুরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সূত্রে প্রকাশ, বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশের জন্য অস্থায়ী ম তৈরির সময় বিনা উস্কানিতে আওয়ামী লেিগর কিছু নেতা-কর্মী বাঁধা দিলে সংর্ঘষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আবদুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের পর ঢাকার ১৬টি স্পটে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে আজ মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশন সমাবেশের আয়োজন করে দলটি। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিরপুরে তিনটি স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুপুর ১টার দিকে মিরপুর ৬ নম্বর কাঁচাবাজারের সামনে ম তৈরির অনুমতি দেয়া হয়। অনুমতি পাওয়ার পর ম তৈরির কাজ শুরু করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চারদিক থেকে হামলা শুরু করে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে পুলিশ থাকলেও তারা আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলা ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির সমাবেশের জন্য অস্থায়ী ম তৈরিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এ ঘটনায় মিরপুর-৬ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, আমাদের তিনটি স্থান পরিবর্তন করে দুপুর ১টার দিকে কাঁচাবাজারের সামনে প্রশাসন ম তৈরির অনুমতি দেয়। আমরা ম তৈরির কাজ শুরু করলে চারদিক থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে অভিযোগ করে আমিনুল হক বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ও গুলি নিক্ষেপ করেছে। এই বিষয়ে জানাতে ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতারা ডিএমপি কমিশনারের অফিসে যাচ্ছেন বলেও জানান আমিনুল হক।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, দুপুর একটার সময় সমাবেশ করার জন্য ডিসি সাহেব আমাদের অনুমতি দিয়েছেন। অনুমতি পাওয়ার পর আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে মাইক ও অস্থায়ী স্টেজ বানানোর সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইলে আওয়ামী লীগের হয়ে পুলিশ আমাদের লোকদের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের উপর টিয়ার শেল ও গুলি বর্ষণ করে। এখনো হামলা চলছে। এখন মিরপুর ১০ থেকে মিরপুর-১২ পর্যন্ত গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।