গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন! অতিরিক্ত তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রিক, পেট ফুলে থাকা, বদহজমসহ পেটে ব্যথার মতো নানা সমস্যায় ভুগতে হয়। তবে এই লক্ষণগুলোকে গ্যাস্ট্রিক ভেবে ভুল করেন বেশিরভাগ মানুষই। তবে জানলে অবাক হবেন, এসব লক্ষণ কিন্তু আলসারেরও ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই দীর্ঘদিন এসব সমস্যায় ভুগলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আলসার শব্দের অর্থ দ্বারা ক্ষত বোঝানো হয়। পেটের ভেতেরে ক্ষতের সৃষ্টি হয় বলে একে স্টোমাক আলসার বা পেপটিক আলসার বলা হয়। মূলত পাকস্থলী বা ডিওডিনামে হয় পেপটিক আলসার। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই এ রোগের কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা নেই। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভেবে বেশিরভাগ মানুষই আলসারকে চিনতে পারেন না। ফলে পেটের ক্ষত অনেকটাই বেড়ে যায়।
স্টোমাক আলসার কেন হয়? এ বিষয়ে কলকাতার আমরি হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুদ্রজিৎ পাল জানান, এইচ.পাইলোরি নামক ইনফেকশনের কারণে পেটে আলসার হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথার ওষুধ, কেমো থেরাপির ওষুধ খাওয়ার কারণেও পেটে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। আবার যারা নিয়মিত তেল-মসলা ও ঝালজাতীয় খাবার দীর্ঘদিন ধরে খান ও মদ্যপান বা ধূমপান করেন তাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় এই কঠিন অসুখ।
স্টোমাক বা পেপটিক আলসারের লক্ষণ কী? >> পেট ব্যথা >> পেটে জ্বালাপোড়া ভাব >> বমি হওয়া
>> পেট ফুলে যাওয়া >> ক্ষুধা না লাগা >> অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটি সমস্যা
কীভাবে রোগ নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কী? ডা. রুদ্রজিৎ পাল জানান, দীর্ঘদিন এই রোগের চিকিৎসা করা না হলে অ্যানিমিয়া, পাকস্থলী ও ডিওডিনাম ফুটো হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।
এছাড়া এই ক্ষত থেকে অনেকের হতে পারে ক্যানসারও। তাই দ্রুত রোগ নির্ণয় করা জরুরি। এই পরিস্থিতিতে এন্ডোস্কোপি করে এই রোগ চিহ্নিত করা যায়। বিশেষজ্ঞের মতে, ইনফেকশন দেখা দিলে অ্যান্টি বায়োটিক গ্রহণের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। দুই সপ্তাহের কোর্স হয়। এছাড়া অ্যাসিডজনিত কারণে সমস্যা হলে প্যান্টোপ্রাজল জাতীয় ওষুধ খেতে হয়। এর পাশাপাশি জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। বিশেষ করে খাদ্যতালিকা থেকে অস্বাস্থ্যকর সব খাবার বাদ দিতে হবে।
কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন? ডা. রুদ্রজিৎ পাল পরামর্শ দেন, আলসারের সমস্যা প্রতিরোধে ঝালজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। এর পাশাপাশি বাদ দিন ধূমপান ও মদ্যপান।