মাঠের মাঝ বরাবরে একটি কলা গাছের নিচে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে সাপ। অপরদিকে মাঠের চারদিক বসে সাপকে ডাকছেন ওঝারা(সাপুরে)। যেই সাপুরের কাছে সাপটি যাচ্ছেন তিনি হচ্ছেন বিজয়ী। আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী এই সাপ খেলাকে অনেকেই বলছেন বিষ(পাতা) খেলা আবার কেউবা বলছেন সাপ খেলা। আর এই সাপ খেলা দেখতে ভিড় করেছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। শনিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্টপুর এলাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ সাপ খেলার। এলাকার আদিবাসী ক্লাবের আয়োজনে এই খেলার উদ্বোধন করেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেরেকুল ইসলাম ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য দেবশীষ দত্ত সমীর। বাপ-দাদার আমলের সেই ঐতিহ্যবাহী খেলা ধরে রাখতেই এবারে সাপ খেলার আয়োজন করা হয় বলে জানান আদিবাসিরা। অনেকই আবার এই সাপ খেলাকে বলছেন বিষ(পাতা) খেলা আবার কেই বলছেন ঝাঁপন খেলা। খেলায় দূরদূরান্ত থেকে ৮ জন সাপুরে (ওঝা) প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। দীর্ঘদিন পর গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা দেখতে কয়েক হাজার উৎসুক জনতা ভিড় জমায় সেখানে। সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের মাঝে একটি কলা গাছের নিচে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে সাপ। পরে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনকারী সাপুরেরা মন্ত্রের মাধ্যমে নিজের কাছে ডেকে নিচ্ছেন সাপকে। যে সাপুরের কাছে সাপটি যাচ্ছেন সেই হচ্ছেন বিজয়ী। এভাবেই পর্যায়ক্রমে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান পর্যন্ত খেলাটি হয়ে থাকে। খেলায় প্রথম হয়েছে কৃষ্ণ টুডুর সাপুরে দল, দ্বিতীয় হয়েছে আবু তালেবের সাপুরে দল ও তৃতীয় হয়েছেন মানুরাম সাপুরের দল। খেলা দেখতে আসা দর্শনার্থী অঞ্জলি, দিপ্তিরানী সহ কয়েকজন বলেন, একটা সময় এই সাপ খেলা দেখা যেতো শহরের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু দিন দিন এই খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। আদিবাসীদের আয়োজনে আবারো সেই গ্রাম বাংলার সাপ খেলা দেখা হলো। দেখে ভালো লাগলো অনেক। আশা করি এই ঐতিহ্যতা বজায় রাখবেন তারা।ঐতিহ্যতা ধরে রাখতেই করা হয়েছে এই সাপ খেলার আয়োজন বলে জানালেন আদিবাসী ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরল মারডি। আর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা আগামীতেও করতে সবরকম সহযোগিতার আশ^াস দিলেন নারগুন ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান সেরেকুল ইসলাম ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবশীষ দত্ত সমীর।