আওয়ামী লীগ তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে বই-কলমের পরিবর্তে লাঠি তুলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গতকাল শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ওলামা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফাতেহা পাঠ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে বই-কলমের পরিবর্তে লাঠি তুলে দিয়েছে। এর প্রমাণ আপনারা কয়েকদিন আগে দেখেছেন। একদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সোনার ছেলেরা অন্যদিকে ইডেন কলেজে তাদের স্বর্ণালি কন্যারা যে ঘটনা ঘটাচ্ছেন সেটা তো নজিরবিহীন। এসব ঘটনা অব্যাহত রাখতেই ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বিএনপির মাথা থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভুত নামানোর কথা বলছেন।
তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে জুলুমের তরবারি ঝুলিয়ে রেখেছেন। তথ্যমন্ত্রী বলছেন- গণমাধ্যমকে বাংলাদেশের অর্জনগুলো দেখাতে হবে। আমি উনাকে বলবো- কী অর্জন আছে আপনাদের? ঢাকা শহরে ৫০টি ক্যাসিনো আছে, সেই অর্জন দেখাতে হবে? ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে যখন গুলি খেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে তখন প্রায় পৌনে দুই শ’ লোক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছেন। ঢাবিতে ছাত্রলীগ হামলা করছে, ইডেনে ছাত্রলীগের মেয়েরা যা করছে, এগুলো গণমাধ্যমে দেখাতে হবে?
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিদেশীরা কী বলছেন তা সরকারের কানে যায় না। বাংলাদেশের রাজনীতি যারা পর্যবেক্ষণ করেন তারা কী বলছেন, ইউরোপ-আমেরিকা কী বলছে, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ কী কথা বলছে, তা-ও সরকারের কানে যায় না। কারণ, যাদের অবৈধ সত্তা আছে। যারা জনগণের ভোটকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায় তারা এগুলো শুনবেন না।
দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন না হয় সেজন্য আওয়ামী সরকার উঠেপড়ে লেগেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার যারা দিনে ভোট করতে ভয় পায়, যারা নিশিরাতে জাল ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় আছে, তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন না হয় সেজন্য উঠেপড়ে লেগেছে। প্রধানমন্ত্রীসহ তারা নানা কথা বলছেন। দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। তারা অর্থপাচার, দুর্নীতি ও লুটপাট করে অত্যন্ত সুখে আছেন।
তিনি বলেন, একটা দরজা-জানালার দাম ২২ লাখ টাকা দেখানো হয়। এভাবে বিভিন্ন সেক্টরে অবাধ লুণ্ঠনের মাধ্যমে সরকার যে স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছে এই স্বর্গ থেকে তারা বিদায় হতে চান না। এ কারণেই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- ‘বিএনপির মাথা থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভুত নামাতে হবে’। এটা তো উনি বলবেনই। আইনমন্ত্রী বলছেন, ‘বিএনপিকে তত্ত্বাবধায়কের দাবি থেকে সরে আসতে হবে’। এ কারণেই বলছেন- আইনমন্ত্রী তো দিনের ভোটে কোনোদিনই নিজ এলাকায় জিততে পারবেন না। তাকে এই বিনাভোটেই নির্বাচিত হতে হবে। সে কারণেই অবাধ-সুষ্ঠ নির্বাচন তারা হতে দিতে চান না। ওবায়দুল কাদেরও জানেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কী পরিণতি হবে তাদের।
এ সময় ওলামা দলের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহ মো: নেসারুল হক, সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সেলিম রেজা ও মাওলানা শাহ মুহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।