দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর আনন্দ ভাগাভাগি ও প্রানবন্ত করতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ। বুধবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাঘর নদীতে এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এ নৌকা বাইচ দেখতে নদীর দু’পাড়ে কয়েক হাজার লোকের সমাগম ঘটে। শত বছরেরও বেশী সময় ধরে চলে আসা এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর বিজয়া দশমীর দিনে। কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের আয়োজন ছাড়াই এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর কোটালীপাড়ার আশপাশের এলাকা ছাড়াও মাদারীপুর বাগেরহাট, বরিশাল জেলা থেকে অসংখ্য দর্শক এ নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসেন। এ বাইচে অংশ নিয়ে ছিল নানা রঙ্গের বাচারী নৌকা। এবারের নৌকা বাইচে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ১৫টি সরেঙ্গা, ছিপ, কোষা বাচারী নৌকা অংশ নেয়। নান্দনিক এ নৌকা বাইচ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এলাকার অধিকাংশ লোকই প্রতি বছর এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করে। অনেকে গ্রামের বাইরে গিয়ে নানা কাজে শহরে জীবন যাপন করেন। কিন্তু, এদিন তারা কাটান একেবারেই গ্রাম্য পরিবেশে আর গ্রামীন সংস্কৃতির সঙ্গে। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম বাদল বলেন, কথিত আছে যে আজ থেকে প্রায় দেড়শত বছর আগে যশোরের বিঘাপতির জমিদার খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে ঘাঘর নদীতে দূর্গা পূজার বিজয়া দশমীর দিন এখানে মেলা ও নৌকা বাইচের আয়োজন করেছিলেন। সেখান থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় এখানে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। কোটালীপাড়া উপজেলার সকল ধর্মের জনগন এই নৌকা বাইচে অংশ গ্রহন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, নদী খাল বিল বেষ্টিত কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিশ্বকর্মা পূজা, দুর্গাপূজা, লক্ষ্মী পূজায় নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এই বাইচ কেউকে আয়োজন করতে হয় না। এই নৌকা বাইচে কাউকে পুরস্কারও দেওয়া হয় না। কোটালীপাড়ার এই নৌকা বাইচ একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। তবে এ বছর নৌকা বাইচে যে কয়টি নৌকা এসেছিল ঘাঘর বাজার বনিক সমিতির পক্ষ থেকে তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ জন্য বনিক সমিতিকে ধন্যবাদ জানাই। অপরদিকে উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের রামশীল নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সকল নৌকা বাইচে উপস্থিত ছিলেন।