বিদ্যুতের পাইকারি পর্যায়ে নতুন দাম ঘোষণা হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য (গ্যাস) মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী বিদ্যুতের দাম বাড়ার সিদ্ধান্তের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৩০মিনিটে বিদ্যুতের পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ১৮ মে গণশুনানি হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির পর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়ার নিয়ম রয়েছে। গণশুনানির ৯০ কার্যদিবসের সময়সীমা শেষ হবে আগামী ১৪ অক্টোবর।
এর আগে যেকোনো দিন বিদ্যুতের দাম বাড়ার ঘোষণা আসতে পারে বলে গত রোববার জানিয়েছিলেন বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল।
এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সেদিন বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দাম ঘোষণা করব। ৫০-৬০ পৃষ্ঠার একটা রায়, প্রতিটি শব্দ দেখে দিতে হয়। এ জন্য একটু সময় লাগছে। রায় ঘোষণার কাজটি ফাইনাল স্টেজে আছে।
বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জন্য। পিডিবি গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কারিগরি কমিটি তাদের সুপারিশে বলেছে, ভোক্তা পর্যায়ে দাম না বাড়ালে পাইকারি মূল্যহার কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসছে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর)। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিইআরসির সদস্য মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার সকালে নতুন দাম ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পাইকারিতে দাম বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে এখনই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না।’
চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পিডিবি ভর্তুকি তুলে দিয়ে বিইআরসির কাছে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবে বর্তমান দর ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব করে বিপিডিবি। গত ১৮ মে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে গড়ে প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে জ্বালানি খাতের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। নিয়ম অনুযায়ী- ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শুনানির রায় ঘোষণা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ১৩ অক্টোবরের মধ্যেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে হবে। বিইআরসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাইকারিপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না। কারণ বিদ্যুৎ বিতরণকারী সব কোম্পানি বর্তমানে মুনাফায় রয়েছে। তাই বাল্ক বিদ্যুতের দাম ২০-২৫ শতাংশ বাড়ালে তাদের খুব একটা সমস্যা হবে না।’ বিইআরসির একাধিক সূত্র জানায়, কমিশন ১৫-২৫ শতাংশের মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত করে রেখেছে। এরই মধ্যে তা বিদ্যুৎ বিভাগে জমাও দেওয়া হয়েছে। সরকার চাইলে এটি কিছুটা বাড়াতে বা কমাতেও পারে। এক্ষেত্রে সরকার কতটা ভর্তুকি দেবে তার ওপর নির্ভর করবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর হার। বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা। গত ১৮ মে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে ইউনিটপ্রতি ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে আট টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল পিডিবি।
তবে বিইআরসির কারিগরি কমিটি গণশুনানিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ভর্তুকি ছাড়া আট টাকা ১৬ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করে। ফলে সরকার যদি ভর্তুকি দেয়, সেক্ষেত্রে দাম কিছুটা কম বাড়ানো হতে পারে। সরকার ভর্তুকি দিতে না চাইলে দাম কিছুটা বেশি বাড়তে পারে।