নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে এনআইডি সেবা দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এমন বিধান রেখে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (সংশোধন) আইন, ২০২২’র খসড়া শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার এ সিদ্ধান্তকে সংবিধান পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সম্পাদক এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, গত সোমবার মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এনআইডি কার্ড প্রস্তুতের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করা হলো। সরকারি এই সিদ্ধান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সংবিধান পরিপন্থি। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
বিষয়টি উল্লেখ করে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ভোটার তালিকা এবং জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র একই বিষয়বস্তু নয়। সরকার মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি বড় ধরনের বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য প্রথমে ভোটার তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে সংবিধান অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন। পরে এই ভোটার আইডি কার্ডের বহুবিধ ব্যবহারের জন্য এনআইডি (ন্যাশনাল আইডি) কার্ড হিসেবে আইনের মাধ্যমে নামকরণ করা হয়। যেখানে সংবিধানে ১১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকবে। এ অবস্থায় মন্ত্রিসভার এ সিদ্ধান্ত সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধান পরিপন্থি এবং বেআইনি। এই সিদ্ধান্ত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের ষড়যন্ত্রের একধাপ অগ্রগতি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।