নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতিয় পার্টির সমর্থিত প্রার্থীর কাছে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিপুল ভোটে পরাজয় হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ৩নং ওয়ার্ডের হাতি প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমকে আওয়ামীলীগের সমর্থিত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। সেই লক্ষ্যেই তারা প্রতিটি ইউনিয়নে প্রার্থীদের কাছে মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমের হাতি প্রতীকে বিজয়ী করতে ভোট প্রার্থনা করেন। অন্যদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবালের পক্ষে তালা প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধিতায় মাঠে নেমে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা তার সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকত ও জাতিয়পার্টির সভাপতি শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ রব। এমপি খোকার সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকত প্রতিটি ইউনিয়নের ভোটারদের কাছে গিয়ে তালা প্রতীকের প্রার্থী ইকবালকে সাথে নিয়ে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। এক পর্যায়ে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির তুমুল লড়াইয়ে পরিনিত হয় এই নির্বাচনটি। শেষ পর্যন্ত আওয়ামীলীগকে ৩২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হয় জাতীয় পার্টি। স্থানীয় বোদ্ধা মহল মনে করেন, আগামী নির্বাচনের মাত্র বছর খানিক সময় বাকি। যে কারনে এখানকার সিংহভাগ জনপ্রতিনিধিরা কার পক্ষে রয়েছেন সেটা প্রমানেও মাঠে নেমে যান এমপি খোকা ও সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত। কারন আগামী জাতীয় নির্বাচনেও এমপি খোকা ও কায়সার হাসনাতের মধ্যেই হতে পারে মনোনয়ন লড়াইটা (যদি মহাজোট বহাল থাকে)। যে কারনে কায়সার হাসনাতের জন্য বিষয়টি চ্যালেঞ্জ ছিলো, ঠিক একইভাবে এমপি খোকার জন্যও চ্যালেঞ্জ ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতিয়পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সমর্থিত প্রার্থী আবু নাইম ইকবালের তালা প্রতীকই বিজয় ছিনিয়ে নেয়। প্রার্থী আবু নাইম ইকবাল ও মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম প্রার্থী হলেও তাদের আদতে এখানে তুমুল লড়াইটা হয়েছে মুলত এমপি খোকা ও কায়সার হাসনাতের রাজনৈতিক অবস্থান। সবশেষে এখানে জনপ্রতিনিধিরাও আস্থা রাখলো জাতীয় পার্টির এমপি খোকার উপর। এমপি খোকার সমর্থিত প্রার্থী ইকবাল হয়েছেন বিজয়ী। যদিও সোনারগাঁয়ের ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৮টিতে রয়েছেন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। বাকি একটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান হলেও তারা আওয়ামীলীগার। আরেকটি একটি ইউনিয়নে জাতিয়পার্টির চেয়ারম্যান মাত্র একজন। সত্যিই কি শেষ রক্ষা হলো! সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের? ঠিক কি কারনে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। কারন আওয়ামী লীগের ঘরেই বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ বসবাস করে। এ আর নতুন কিছু নয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনেই এর সঠিক প্রমাণ পাওয়া গেল। ১৭ অক্টোবর সোমবার সকাল থেকে সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে এই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এখানে মোট ভোটার ছিলেন ১৩২ জন জনপ্রতিনিধি। নির্বাচনে তালা প্রতীকে আবু নাঈম ইকবাল পেয়েছেন ৮৩ ভোট ও তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী হাতি প্রতীকে মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম পেয়েছেন ৪৯ ভোট। ৩৪ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন আবু নাইম ইকবাল। স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হাতি প্রতীকের মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমের পরাজয়ের পর ঘুরে দাড়াতে পারবেন কি সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ?