ফরিদপুরে স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি) প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়ন পরিষদের কর মূল্যায়ন ও আদায় সংক্রান্ত বিষয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে, বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার ইএএলজিভুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এবং কর নিরুপন ও আদায় বিষয়ক কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্যদের-এর অংশগ্রহণে দিনব্যাপী প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা এর সভাপতিত্বে, কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সহকারী পরিচালক মোঃ মুজিবুল ইসলাম। দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইএএলজি’র ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর মোঃ মনির হোসেন মজুমদার, এলজিএসপি ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর মোঃ আমিরুল ইসলাম, সেভ দ্যা চিলড্রেন মা মনি এম এন.সি.এস প্রকল্পের ম্যানেজার মোঃ ফরিদুল জুলফিকার, আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুক ও ইউপি সচিব সাহাজাহান ফকির প্রমুখ। কর্মশালায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯; ইউনিয়ন পরিষদ (কর) বিধিমালা, ১৯৬০; ইউনিয়ন পরিষদ আদর্শ কর তফসিল, ২০১৩ ও সংশ্লিষ্ট বিধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনার মধ্যে সরকার ইউনিয়ন পরিষদের সকল পরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবদের দায়িত্ব অনুযায়ী আয়ের পথ সুগম করতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ, ১৯৮৩-এর ৫৩ ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের অনুমোদন লাভের পর ইউনিয়ন পরিষদকে কর আরোপ ও আদায়ের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আবার সরকার আদর্শ কর তফসিল প্রণয়ন করতে পারে। কর তফসিল প্রণীত হলে ইউনিয়ন পরিষদ আদর্শ কর তফসিল অনুযায়ী কর, রেট, ফি ধার্য করবে। ঘর-বাড়ির বার্ষিক মূল্যের ওপর কর অথবা রেট ধার্য করতে হলে ইউনিয়ন পরিষদকে প্রতি পাঁচ বছরের জন্য কর মূল্যায়ন তালিকা তৈরি করতে হবে। জেলা প্রশাসকের অনুমোদনক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত এসেসর মূল্যায়ন তালিকা তৈরি করবেন। মূল্যায়ন সম্পর্কে কারও কোন আপত্তি থাকলে বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে হবে। অতঃপর ইউনিয়ন পরিষদের বিশেষ সভায় মূল্যায়ন তালিকা গৃহীত হবার পর জেলা প্রশাসকের অনুমোদনের জন্য পেশ করতে হবে। ঘর-বাড়ির বার্ষিক মূল্যের সর্বোচ্চ শতকরা ৭ টাকা হারে ঘরবাড়ির কর ধার্য করতে হবে। কর্মশালায় ইএএলজির সহযোগিতায় ফরিদপুর সদরের আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নতুন করে কর মূল্যায়ন ও ধার্য্য করার কারণে আগের চেয়ে বেশী টাকা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে। পূর্বে তাদের কর আদায়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। কর মূল্যায়নের ফলে এখন প্রায় ৭ লক্ষ টাকার বেশী আদায় করতে পারছেন। কর্মশালায় আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের কর ধার্য ও আদায় বিষয়ে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। কর্মশালায় উপস্থিতি চেয়ারম্যান ও সচিবগণ নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদের কর ধার্য ও আদায় বিষয়ে অচিরেই কর্মসূচি হাতে নিবেন বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।