ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য যে পাঁচ একর জমি দেয়া হয়েছে সেখানে আগে একটি হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট।
নতুন জায়গাটি বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ধন্নিপুর গ্রামের একটি সরকারি কৃষি ফার্মে। সেখানে এখনও কৃষিকাজ চলছে। একটি দরগাও রয়েছে সেখানে। নতুন পরিসরে মসজিদ যেমন থাকবে, তেমনই তৈরি হবে হাসপাতাল, রান্নাঘর ও ভারতীয় ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে উত্তর প্রদেশ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য যে জায়গা দেয়া হয়েছে, সেটি নির্মাণের সব দায়িত্ব ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের। ট্রাস্টের সচিব আতহার হুসেন বলেন, নতুন এই পরিসরটিকে বাবরি মসজিদ বলা হবে না। এর নাম হবে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট কমপ্লেক্স। এখানে একটি মসজিদ ছাড়াও হাসপাতাল, রান্নাঘর, একটি ইন্দো-ইসলামিক গবেষণাকেন্দ্র এবং একটি সংগ্রহশালা থাকবে। সেখানে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইসলামিক সংস্কৃতির মিলন, ভারতীয় সমাজের ওপরে তার প্রভাব নিয়ে গবেষণা হবে সেখানে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে অযোধ্যা ফৈজাবাদের মানুষকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে প্রথমে হাসপাতাল ভবনটি তৈরি করতে চায় কর্তৃপক্ষ। সবকটি ভবন তৈরির কাজ একই সঙ্গে চলবে, কিন্তু প্রথমেই হাসপাতালটি চালু করার ইচ্ছা আছে। মহামারির সময়ে হাসপাতালে শয্যার অভাবে কীভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে, সবাই দেখছে। হাসপাতালটি চালু হলে অন্তত একটা জেলার মানুষকে তো বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া যাবে। কয়েকদিন আগে এই প্রকল্পের স্থপতি হিসেবে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ডিন অধ্যাপক এস এম আখতারকে বেছে নেয়া হয়েছে।
এস এম আখতার বলেন, নতুন পরিসরটি দেখতে একেবারেই পুরনো বাবরি মসজিদের মতো হবে না। সেখানে আধুনিক ভবন তৈরি হবে। স্থাপত্য বিদ্যায় কোনো কিছুই হুবহু নকল হয় না, সব সময়ই নতুন কিছু হয়। যা কিছু পুরনো, তা পুরাতত্ত্বের বিষয়। আর আমরা যখন কিছু বানাই সেটা হয় নতুন। তিনি আরও বলেন, তিন গম্বুজওয়ালা যে বাবরি মসজিদের ছবি মানুষের মনে গেঁথে আছে, নতুন জায়গাটি সেটার মতো কখনই হবে না। পুরনো বাবরি মসজিদের নকল যেমন হবে না, তেমনই মানবিকতা, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইসলামের মূল চিন্তা– নতুন পরিসরের নকশায় এই তিনটি বিষয়ই একত্রিত হবে।