সর্বাধিক প্রচারিত শিশু-কিশোর মাসিক নতুন কিশোরকণ্ঠ আয়োজিত ‘জাতীয় কিশোরকণ্ঠ পাঠ প্রতিযোগিতা ২০২২’-এর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রাজধানীর এক মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।
২০২২ সালের জুন, জুলাই ও আগস্টসংখ্যার ওপর জাতীয় কিশোরকণ্ঠ পাঠ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় লক্ষাধিক পাঠকের মাঝ থেকে অংশগ্রহণকারী সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্য থেকে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত বাছাইয়ের মাধ্যমে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম পুরস্কার ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকার শিক্ষাবৃত্তি, দ্বিতীয় পুরস্কার ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকার শিক্ষাবৃত্তি, তৃতীয় পুরস্কার ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকার শিক্ষাবৃত্তিসহ মোট ১০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেকের হাতে সনদপত্র, ক্রেস্ট ও মূল্যবান বই তুলে দেওয়া হয়।
কিশোরকণ্ঠের সম্পাদক বিশিষ্ট কবি মোশাররফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সম্পাদক মু.আব্দুল আলীম-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরকণ্ঠ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব রাশেদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেনকিশোরকণ্ঠের শিল্প নির্দেশক হামিদুল ইসলাম ও দৈনিক নয়া দিগন্তের সাহিত্য সম্পাদক কবি জাকির আবু জাফর। অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্বাহী সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন- প্রথমে আমাদের স্রষ্টাকে মানতে হবে। এরপর পিতা-মাতা ও শিক্ষকম-লীদের কথা মান্য করতে হবে। তবেই জীবনে সফল হওয়া যাবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব রাশেদুল ইসলাম বলেন-“পৃথিবী আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তথ্য সংরক্ষণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।নতুন নতুন আইডিয়া ডেভেলপ হচ্ছে।এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আগামীর বিশ্বকে পরিচালনা করার জন্য তোমাদেরকে যোগ্য,দক্ষ এবং নৈতিক মানসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠতে হবে।আমি আশা করি- কিশোরকণ্ঠের আজকের এ উদ্যোগ বাংলাদেশে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এ প্রজন্মকে নতুন দিশা দেওয়ার জন্য যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে এটা আরও বেশি সমৃদ্ধ হবে যদি আমরা আমাদের চিন্তা-চেতনাকে জাতির কাছে পৌঁছে দিতে পারি। আমরা আমাদের নৈতিকতাকে শানিত করে হৃদয়ে হৃদয়ে ছড়িয়ে দেবো ইনশাআল্লাহ।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পী হামিদুল ইসলাম বলেন- “কিশোরকণ্ঠের শুরু থেকে ছিলাম। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তের শিক্ষার্থীদের কাছে কাছে পৌঁছে গেছে এ পত্রিকাটি। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিজয়ী হয়ে তোমরা এখানে এসেছো। তোমাদের সফলতায় আমরা মুগ্ধ। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে তোমরা- এ প্রত্যাশা সবসময়।”
এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নয়া দিগন্তের সাহিত্য সম্পাদক কবি জাকির আবু জাফর বলেন- “তোমাদের সারা বিশ্বকে পাঠ করতে হবে। পাঠ করতে হবে পাখি, নদী-নালা, আকাশ, পাহাড়, প্রকৃতি সবই। মানুষকে পড়তে হবে। তবেই তোমাদের মানবজীবন সার্থক হবে। ”
সভাপতির বক্তব্যে কিশোরকণ্ঠের সম্পাদক কবি মোশাররফ হোসেন খান বলেন- “কিশোরকণ্ঠ পড়বো জীবনটাকে গড়বো- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৮৪ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে বাংলাদেশের অসংখ্য শিশু-কিশোরের প্রিয় মাসিক নতুন কিশোরকণ্ঠ। কিশোরকণ্ঠ পত্রিকা একজন ছাত্রকে পড়ালেখার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় উৎসাহিত করে। আজকের শিশু-কিশোরদের আগামীর বাংলাদেশের জন্য সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এক সাহসী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে কিশোরকণ্ঠ। একই সাথে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে জ্ঞানের রাজ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন ও আদর্শ নাগরিক তৈরি করার লক্ষ্যে এই পত্রিকা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। জাতীয় কিশোরকণ্ঠ পাঠ প্রতিযোগিতা তার মধ্যে অন্যতম। এ প্রতিযোগিতা ২০১২ থেকে চলছে। শিশু-কিশোরদের সুন্দর ও যোগ্য করে তুলতে মাসিক নতুন কিশোরকণ্ঠের সকল উদ্যোগ যেন সার্বিকভাবে সফল হয় সেই কামনা করছি মহান আল্লাহর দরবারে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কিশোরকণ্ঠের সহকারী সম্পাদক তোফাজ্জল হোসাইন, ওয়াহিদ জামান,জিন্টু আহমেদ, আতহারুল ইসলাম, নাবিউল হাসান, নাহিদ হাসান, ফয়জুল্লাহ মাহমুদ, আমিনুল ইসলাম, হাসান আলী প্রমুখ।
পুরস্কার বিজয়ী যারা :
১ম স্থান : এস. এম মহসিন, আলহাজ ফাতেমা আজিজ আদর্শ বিদ্যানিকেতন, শ্রেণি : ১০ম, দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুর।
২য় স্থান : ইশরাত নূর সামিয়া, বুড়িরচর এম.এ.এ.এম উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রেণি : ১০ম, হাতিয়া, নোয়াখালী।
৩য় স্থান : মো, ইরান মোল্যা, জামিরা বাজার আসমোতিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, শ্রেণি : দ্বাদশ, ফুলতলা, খুলনা।
৪র্থ স্থান : মো. ফারহান মুনায়েম, খিলগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রেণি : ৮ম, খিলগাঁও, ঢাকা।
৫ম স্থান : তারেক হাসান, ধাপ সাতগাড়া বা.ম. কামিল মাদ্রাসা, শ্রেণি : ১০ম, সদর, রংপুর।
৬ষ্ঠ স্থান : মো. রুশান, হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রেণি : ১০ম, বন্দর, চট্টগ্রাম।
৭ম স্থান : ইয়াদুল ইসলাম তামিম, পাবনা ইসলামিয়া মাদরাসা, শ্রেণি : ৭ম, ঈশ্বরদী, পাবনা।
৮ম স্থান : তাসফিয়া নূসরাত, মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রেণি : ৭ম, কদমতলী, ঢাকা।
৯ম স্থান : ইসমাইল আহমদ, দাসউরা সিনিয়র আলিম মাদরাসা, শ্রেণি : আলিম ১ম, বিয়ানীবাজার, সিলেট।
১০ম স্থান : জিহাদুল ইসলাম (ফাহিম), কুমিল্লা জিলা স্কুল, শ্রেণি : ১০ম, আদর্শ সদর, কুমিল্লা।