মারধর করে বসতঘরে তালা মেরে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়ার আদালতে করা মামলায় তদন্ত করতে গেলে কর্মকর্তার সামনেই আবার পুত্রবধুসহ চারজনকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। আহত গৃহবধুকে উদ্ধার করে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এঘটনায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ব্যাবস্থা নেবেন জানান এবং রায়পুর থানায় মামলায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে আহত গৃহবধু। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের বামনী ইউপির সাগর্দি গ্রামের ফকির বাড়ীতে। আহতরা হলেন, প্রবাসী ফিরোজের স্ত্রী গৃহবধু উম্মেহানি পলি, তার ছোট বোন উম্মেহানি পপি, চরপাতা ইউপি সদস্য নাজমা আক্তার ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সহকারি মোহাম্মদ আজাদ হোসেন। আহত গৃহবধু ও ননদ সালেহা বেগম খুকিসহ কয়েকজন জানান, গত ছয় বছর আগে পৌরসভার দেনায়েতপুর গ্রামের বেপারি বাড়ীর হাসানের মেয়ে পলিকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন সাগর্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফিরোজ আলম। দীর্ঘদিন ধরে গৃহবধু পলিকে মানুষিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন করে আসছেন শশুর তসলিম উদ্দিন, শাশুরী আলিমা খাতুন ও মাদকাসক্ত দেবর শরিফ হোসেন। গত ৩১ জুলাই দুই শিশু সন্তানের সামনে পলিকে বেদম মারধর করে তারা তিনজন।এনিয়ে সমাজে বিচার না পেয়ে গত ১১ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর আদালতে তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা (যার নাম্বার-৪৮২/২২) করেন পলি । এ মামলায় পলির পক্ষে আদালতে চার্জশীট দেন তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গির হোসেন। শশুর-শাশুরী ও দেবরের বিরুদ্ধে-নারী নির্যাতন মামলা করায় তারা গত ২০ নভেম্বর দুপুরে আবারও দুই শিশু সন্তানদের সামনে পলিকে মারধর করে বসতঘরে তালা মেরে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এঘটনায় আবার তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে পলি। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোলতানা জোবেদা খানমকে। এমামলায় তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে সোমবার সাগর্দি গ্রামে নোটিশ নিয়ে যান সহকারি মোঃ আজাদ। এসময় ওই কর্মকর্তাকে স্বজোরে ধাক্কা দিয়ে তার সামনেই গৃহবধুসহ চারজনকে পিটিয়ে আহত করে শশুর, শাশুরী, দেবরসহ কয়েকজন বখাটে যুবক। আহতদের উদ্ধার করে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা। এঘটনায় রায়পুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে গৃহবধু- তার মা ও ননদ জানান। এঘটনায় অভিযুক্ত শশুর তসলিম ও শাশুরী আলিমা খাতুন বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক ঝামেলা। আপনার রিপোটের দরকার নাই বলেন। আমরাও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, গৃহবধু লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে। সোমবার রায়পুরের সাগর্দি গ্রামে শশুর-শাশুরি-দেবরের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধু পলি। পাশে বসে মায়ের জন্য কাঁদছেন দুই অবুজ শিশু সন্তান।