সান্তাহারে রেলওয়ে জলাশয় নিলাম ডাকের মাধ্যমে বৈধভাবে বরাদ্দপ্রাপ্ত লীজ গ্রহীতাদেরকে মাছ চাষে বাধা প্রদান করছে এলাকার চিণ্হিত কতিপয় অবৈধ দখলদার স্বার্থান্বেষী মহল। এ ব্যাপারে সান্তাহার জিআরপি থানায় বরাদ্দপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে ২টি অভিযোগ দায়ের করেছে জলাশয়ের বৈধ লীজ গ্রহণকারী ভুক্তভোগী ২ মৎস চাষী। অভিযোগে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ/২০২১ তারিখ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী ভূ-সম্পত্তি বিভাগ হতে সান্তাহারের কলসা ও হলুদঘর মৌজার ১৭ টি জলাশয়ের ইজারা প্রদানের জন্য দরপত্র আহবান করে। দরপত্রে হলুদঘর মৌজার ২০৫ নং প্লটের ০.৭২ একর আবদুলপুরের জনৈক রিমা খাতুন, ২০৭ নং প্লটের ০.৫৫ একর সান্তাহারের আনছার আলী, ২০৩ নং প্লটের ১.৯৭ একর মোঃ মাসুম খাঁন, কলসা মৌজার ২১৩ নং প্লটের ০.৬৩ একর রেজাউল ইসলাম, ২২০ নং প্লটের ০.৬৩ একর পাকশীর প্রান্ত ইসলাম সর্ব্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হলে তাদেরকে বৈধ বরাদ্দপ্রাপ্ত মনোনীত করে রেলওয়ে পাকশী ভূ-সম্পত্তি কার্যালয় হতে উক্ত জলাশয়গুলো তাদের অনুকুলে বরাদ্দ দেয়। অপরদিকে হলুদঘর মৌজার প্লট নং ২০৫ এর অংশের ০.১৬ একর জলাশয় শফিকুল ইসলামের নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এরপর বরাদ্দপ্রাপ্ত মাছ চাষীরা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেলওয়ের লাইসেন্স ফি, আয়কর ও ভ্যাটসহ সকল পাওনাদি পরিশোধ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে উক্ত জলাশয়গুলো অবৈধ ভাবে নিজেদের দখলে রাখে স্থানীয় কতিপয় স্বার্থান্বেষী দখলদাররা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ অক্টোবর /২০২২ তারিখ রেলওয়ে (পশ্চিম) পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুরুজ্জামান সান্তাহারে এসে সরেজমিনে পুকুর পাড়ে উপস্থিত হয়ে লাল পতাকা টানিয়ে বৈধ বরাদ্দপ্রাপ্তদের এবং তাদের নিয়োজিত কেয়ার টেকার মাছ চাষীদের অনুকুলে জলাশয়গুলোর দখল বুঝিয়ে দেন। এ সময় আদমদীঘি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র এএসপি মোঃ নাজরান রউফ, সান্তাহার রেলওয়ে জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্য মোঃ মুক্তার হোসেন, সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্য আব্দুল কাদের জিলানী, টিএসআই রাকিব হোসেন, জিআরপি থানার এসআই মাজেদ আলী, রেলওয়ের ফিল্ড কাুনগো মহসীন আলী, রেলওয়ের কর্মকর্তাগণ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর জলাশয়ের দখল বুঝে নিয়ে মাছচাষীরা উল্লেখিত জলাশয়ে বিপুল পরিমাণ মাছের পোনা অবমুক্ত করে। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী দখলবাজমহল উক্ত জলাশয়ের বৈধ ভাবেপ্রাপ্ত মাছচাষীদেরকে নানা ভাবে হুমকি দেয় ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। এ ব্যাপারে গত ২২ নভেম্বর ভুক্তভোগী রেজাউল ইসলাম (যার নং ১০০৬) ও ৪ ডিসেম্বর শফিকুল ইসলাম (যার নং ৩৬৯ ) নামের ২ মৎসচাষী বাদী হয়ে সান্তাহার জিআরপি থানায় ২টি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে জানা যায়, রেজাউল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম জেলেসহ উল্লেখিত পুকুরে মাছ ধরতে গেলে, যোগীপুকুরের আক্কাস আলী, হেলাল উদ্দিন , মিঠু হোসেন, সান্দিড়াগ্রামের আক্কাস আলী, আমজাদ আলী, ইউসুফ আলী, স্বাধীন, উজ্জল, অনিক ও অজ্ঞাত আরো অনেকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ বে-আইনী জনতায় সংঘবদ্ধ হইয়া পুকুর পাড়ে এসে রেজাউল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম এবং তাদের জেলেদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মারপিট করলে ১ জেলে আহত হয়ে আদমদীঘি উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়। সন্ত্রাসীরা রেজাউল ইসলাম ও শফিকুল ইসলামকে জীবননাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলা-মকদ্দমার ভয় দেখায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ব্যাপারে পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুরুজ্জামান জানিয়েছেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে রেলওয়ে জলাশয় লীজ প্রদানের জন্য দরপত্র আহবান করার পর নীতিমালা অনুযায়ী সর্ব্বোচ্চ দরদাতার অনুকুলে জলাশয় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরপর অবৈধভাবে দখলে থাকা জলাশয়গুলো বৈধ বরাদ্দপ্রাপ্তদের কাছে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এখানে অবৈধ দখলদারীদের কোন সুযোগ নেই। কেউ যদি আইন অমান্য করে রেলওয়ে রাজস্ব আদায়ে বাধা প্রদান করে তাহলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রগণ করা হবে।