বগুড়ার আদমদীঘিতে দিন দিন বাড়ছে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার। এর ফলে নানা দিক দিয়ে উপকৃত হচ্ছে কৃষকরা। শ্রমিক সংকট,স্বল্প সময়ে জমি চাষ করা,ধান কাটা মাড়ার সময় ও খরচ বাঁচাই এমন যন্ত্রের দিকে ঝুঁকছে কৃষকরা। অন্যদিক দিয়ে এসব আধুনিক কৃষি যন্ত্র ব্যবহারে নানান দিক দিয়ে সাহায্য করছে সরকার। এসব কারণে উপকৃত হচ্ছে কৃষকরা। মান্ধাতা আমলের যন্ত্রপাতির পরিবর্তে কৃষকরা আধুনিক সরঞ্জামাদি দিয়ে কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ হওয়ায় সব ধরনের ফসল উৎপাদন কয়েক গুণ বেড়েছে। এতে খরচের পাশাপাশি কৃষকের পরিশ্রমও অনেক কমেছে। তবে হতদরিদ্র অনেক কৃষক অর্থাভাবে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে না পারায় তারা এখনো অনেকটা পিছিয়ে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিপণ্য উৎপাদনে বড় বিপ্লব ঘটাতে সরকার দেশে ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এ টার্গেট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয়ভাবে ভারী কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির পরিকল্পনা করছে। উপজেলার কৃষকদের জন্য প্রতি মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকিতে সিডার পাওয়ার টেলার মেশিন হারভেস্টার মেশিন গার্ডেন ট্রেলার মিশিন ধান মাড়ায়ের মেশিনসহ নানা ধরনের কৃষি যন্ত্র প্রদান করা হচ্ছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এতে করে কম সময়ে ও কম খরচে চাষাবাদের পাশাপাশি জমির ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক গুণ। আবার স্বল্প মূল্যে এই যন্ত্র গুলি ভাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া অল্প জমি চাষের জন্য গার্ডেন ডিলার মেশিন কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়ায়ের মেশিনগুলি প্রদান করা হচ্ছে। অল্প জমি চাষের জন্য গার্ডেন ডিলার মেশিন কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আদমদিঘী উপজেলার সান্দিড়া গ্রামের কৃষক গোলাম আলী জানান, চলতি আমন মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়া এর জন্য মৌসুমী শ্রমিকদের খুঁজতে হয়নি। আধুনিক হাভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতি বিঘা জমির ধান ২ হাজার টাকা করে ধান কাটা ও মাড়াই করে নিয়েছি। এতে করে আমার খরচ ও সময় কম লেগেছে। এ ইউনিয়নে আমার মত পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক কৃষক উপকৃত হয়েছে। নসরতপুর ইউনিয়নের কৃষক গোলাম রাব্বানী জানান সবজি বাগান সহ নানা ছোট ছোট পরিত্যক্ত স্থানে বড় মেশিন দিয়ে চাষ করা সমস্যা তাই আমি বগুড়া কৃষি অফিস থেকে একটি গার্ডেন টেলার মেশিন কিনেছি। এই মেশিন দিয়ে আমি বাড়ির আশেপাশে ছোট ছোট স্থানে চাষাবাদ করে নানা প্রকার সবজি চাষ করেছি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠুন চন্দ্র অধিকারী বলেন, দেশের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে কৃষি। তাই কৃষকদের সময় ও খরচ বাঁচাতে ও পুরাতন পদ্ধতি থেকে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে নানাভাবে। এ বছর উপজেলার কৃষকদের মাঝে চারটি কম্পিউটার হারভেস্টার মেশিন প্রদান করা হয়েছে। ১৫টি ধান মাড়াই যন্ত্র ভর্তুকি মূল্যে বিতরন করা হয়েছে। আগামীতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।