বুয়েট এবং হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মধ্যে যৌথ গবেষণার সমঝোতা স্মারকে চুক্তি সই হবে শিগগিরই। সম্প্রতি হাইড্রো কার্বন ইউনিটের তরফ থেকে জ্বালানি বিভাগকে জানিয়েছে, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এই চুক্তি সই হবে। হাইড্রোকার্বন ইউনিট হচ্ছে জ্বালানি বিভাগের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। মূলত দেশের জ্বালানি অনুসন্ধান বিষয়ক কার্যক্রমের উন্নয়নে নানামুখী গবেষণা করে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। জ্বালানির মজুত নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি নতুন জ্বালানিতে দেশের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও কাজ করে থাকে তারা। হাইড্রোকার্বন ইউনিট সূত্র বলছে, সমঝোতা স্মারকটি বুয়েটের সিন্ডিকেট অনুমোদন করেছে। এখন চুক্তি সই হলেই গবেষণার বিষয়গুলো নির্দিষ্ট করা হবে।
হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক আবুল খায়ের মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘বুয়েটের সঙ্গে আমরা যৌথ উদ্যোগে জ্বালানি খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করবো। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা সেই কাজে আমাদের সহযোগিতা করবেন। চলতি মাসেই এই বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। না-হলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই স্মারক সই হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘বুয়েট ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলোজি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গেও এই ধরনের একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের চিন্তা করা হচ্ছে। গবেষণার বেশ কিছু বিষয় নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ পশ্চিমা লের স্যালাইনিটি নিয়ে আমরা গবেষণা করতে চাই। যেসব গ্যাসক্ষেত্র এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে— সেখানে গ্যাস আছে কিনা, থাকলে সেটি কী পরিমাণ— তা নিয়েও গবেষণা করতে চাই। এছাড়া আরও বেশ কিছু বিষয়ে বুয়েটের সঙ্গে আমরা গবেষণা করার চিন্তা করছি। সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পর বিষয়গুলো নির্দিষ্ট করা হবে।’
আবুল খায়ের মো. আমিনুর রহমান আরও বলেন, ‘জ্বালানি খাতে গবেষণাধর্মী কাজ খুব একটা হয় না বললেই চলে। সব সময় বিদেশি গবেষকনির্ভর হওয়াতে তাদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের চিন্তার সঙ্গে দেশের স্বার্থ খুব বেশি কাজে আসে না।’ হাইড্রোকার্বন ইউনিট সূত্র বলছে, গবেষণার বিষয় বুয়েট এবং হাইড্রোকার্বন ইউনিট যৌথভাবে ঠিক করবে। এক্ষেত্রে সময়োপযোগিতা চিহ্নিত করে বিষয় নির্বাচন করা হবে। হাইড্রোকার্বন ইউনিটের ওয়েব সাইট ঘেটে দেখা গেছে, গত ১০ বছরে তারা বড় কোনও গবেষণা করেনি। বেশিরভাগ গবেষণা ২০১০ এবং ২০১১ সালের দিকে করা হয়েছে। সারা বিশ্বই জ্বালানি সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন গবেষণা করছে। কিন্তু আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও সেটি অনেকটা অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।
অভিযোগ আছে, জ্বালানির গবেষণা খাতে যে পরিমাণ বরাদ্দ পাওয়ার কথা, তা দেওয়া হয় না বলেই দেশে এ নিয়ে কোনও গবেষণা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, সরকার বিদ্যুৎ খাতে গবেষণাধর্মী কাজকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বিনিয়োগও করছে। এখন জ্বালানিতে গবেষণার জন্য বরাদ্দ দিলে নতুন নতুন কাজ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।