আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ক্যাশিয়ার মো. আব্দুছ ছাত্তার মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য আদায়কৃত সরকারি রাজস্ব (ইউজার ফি) বাবদ দুই কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪১ টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ক্যাশিয়ার মো. আব্দুছ ছাত্তার মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। তিনি আরও জানান, অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা না দিয়ে বিশ্বাসভঙ্গ ও অসদাচরণের মাধ্যমে আত্মসাৎ করায় দ-বিধির ৪০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এজাহার সূত্র জানায়, আসামি মো. আব্দুছ ছাত্তার মিয়া (৫৪) গত ১লা জুলাই থেকে ২৮শে নভেম্বর পর্যন্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য আদায়কৃত সরকারি রাজস্ব (ইউজার ফি) বাবদ ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪১ টাকা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার অভিপ্রায়ে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি কোষাগারে জমা না করে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও অসদাচরণের মাধ্যমে আত্মসাৎ পূর্বক দ-বিধির ৪০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে আসামি মো. আব্দুছ ছাত্তার মিয়ার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪১ টাকা আত্মসাতের দায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে মামলা রুজু ও মামলা তদন্তের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, আসামি মো. আব্দুছ ছাত্তার মিয়া হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষার সরকারি রাজস্ব (ইউজার ফি) বাবদ আদায়কৃত অর্থ মিটফোর্ড হাসপাতাল শাখার অগ্রণী ব্যাংকে অর্থ জমা প্রদান করতেন। তিনি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে মিটফোর্ড শাখা সোনালী ব্যাংকে সমুদয় অর্থ জমা দিতেন। তিনি দৈনিক আদায়কৃত ইউজার ফি’র নগদ অর্থ হাসপাতালের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. আলী ইমামের কাছ থেকে গ্রহণ করতেন। হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. জাহেদুর রহিমের হিসাব অনুযায়ী আদায়কৃত ইউজার ফি’র পরিমাণ ৫ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৮ টাকা। কিন্তু ব্যাংকে ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪৫ হাজার ২৪৭ টাকা জমার হিসাব পাওয়া যায়। আসামি মো. আব্দুছ ছাত্তার মিয়া অবশিষ্ট ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪১ টাকা হাসপাতালের ব্যাংক হিসাব কিংবা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। গত ৩০শে নভেম্বর তিনি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কাছে কৃত অপরাধের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।