বগুড়ার আদমদীঘিতে মূলা এখন ১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে চাহিদা না থাকায় এবং মূলা বাজারজাত করে শ্রমিকের মূল্যও উঠবে না ভেবে ফসলি জমি থেকে মূলা তুলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার সকালে উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের দূর্গাপুর মাঠে গিয়ে দেখা গেছে শত শত মণ মূলা তুলে ফেলা দেওয়া হচ্ছে। এসব মূলার জমিতে কৃষকরা এখন অন্য ফসল চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রচুর পরিমাণ শীতের শাক সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবে বাজারে আমদানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিভিন্ন সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। সবচেয়ে দাম কমেছে মূলার। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মূলা এখন এক টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মূলা চাষি শাহানাজ বেগম বলেন, এবার ১৫ শতাংশ জমিতে মূলা আবাদ করেছেন। বাজারে মূলার দাম না থাকায় এবং মূলার গায়ে দাগের কারণে তিনি জমি থেকে মূলাগুলো তুলে ফেলে দিচ্ছেন। আরেক কৃষক আমিনুল হোসেন জানান, তিনি খরচ তুলতে কয়েকমণ মূলা হাটে নিয়ে গিয়ে বিপদে পড়েন। এক টাকা দরেও মূলা বিক্রি করতে পারেননি। তিনিও হতাশ। মূলা তুলে ফেলে দিয়ে তাই ওই জমিতেই অন্য শাক সবজি চাষ করবেন। উপজেলা কৃষিসম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২০২২-২৩ মৌসুমে ৩১৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এবার ৩২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে শাক সবজির দাম কিছুটা বেশি থাকলেও উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। এখানকার শাক সবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামহাটের মূলা ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী ও সোহেল রানা জানান, শুরুর দিকে আশানুরূপ দাম পেলেও মূলার বাজার মূল্যে দ্রুত ধস নামে। শুরুর দিকে আড়াই হাজার টাকা মণ থাকলেও এখন ৪০ টাকা মণ দরে মূলা বিক্রি করতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এবার অন্য সবজির সাথে চাষিরা প্রচুর পরিমাণ মূলা চাষ করেছেন। হাট-বাজাওে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম দ্রুত কমে গেছে।