দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা যেমন- ডায়বেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে এবং নিজেকে সুস্থ রাখার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে শরীরচর্চা। রুটিনমাফিক শরীরচর্চা এবং কাঙ্খিত ফল পেতে মানুষ প্রচুর অর্থ ব্যয় করে জিম কিংবা ব্যক্তিগত প্রশিক্ষকের পেছনে। যদি এখন আপনাকে বলা হয় যে, সুস্বাস্থ্যের জন্য আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাম ঝরাতে হবে না! নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন? অবাক করা এই তথ্য প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১৮-৬৪ বছর বয়সীদের লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট পরিমিত মাত্রায় অথবা ৭৫ মিনিট তীব্র মাত্রায় এরোবিক ব্যায়াম (হাঁটা ,সাঁতার ,দৌড়ানো) অনুশীলন করা অথবা তীব্র ও পরিমিত মাত্রা মিলিয়ে সমপরিমান এরোবিক ব্যায়াম করা। অধিক উপকারিতার জন্য, প্রাপ্তবয়স্করা প্রতি সপ্তাহে তাদের ব্যায়ামের মাত্রা বাড়িয়ে ৩০০ মিনিট কিংবা ১৫০ মিনিট তীব্র মাত্রায় শরীরচর্চা করতে পারে। সপ্তাহে দুই কিংবা তার বেশি দিন পেশী মজবুত করতে শরীরচর্চা করা উচিত।
সাপ্তাহিক ব্যায়ামকারীরা কি একই সুবিধা পেয়ে থাকে? কিছু মানুষ অতি-উৎসাহী হয়ে প্রতিদিনই ব্যায়াম করে থাকেন এবং সপ্তাহে একদিন বিরতি নেন। আবার কিছু মানুষ আছেন, যারা সাপ্তাহিক যোদ্ধা নামে পরিচিত, সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে এক বা দুইদিন শরীরচর্চা করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তারা কি সমান সুবিধা লাভ করেন যারা প্রতিদিন অনুশীলন করে তাদের মতো? জামা ইন্টারনাল মেডিসিন কর্তৃক প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুযায়ী, একজন মানুষ কতদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকবে তা ওই মানুষটি কতক্ষণ ব্যায়াম করে তার ওপর নির্ভর করে না। ৬৩,০০০ মানুষের ওপর করা এক সমীক্ষা বলছে, যারা একদমই ব্যায়াম করেন না তাদের তুলনায় যারা কেবল সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যায়াম করেন, তাদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি ৩০-৩৪ শতাংশ কম। তবে সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হচ্ছে, যারা সপ্তাহের প্রায়দিনই ব্যায়াম করে তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ কম। এটি যারা সপ্তাহে এক বা দুইদিন শরীরচর্চা করেন তাদের তুলনায় খুব বেশি নয়। এই গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, কিছু শারীরিক কার্যকলাপ, যা মূলত নিদির্ষ্ট গাইডলাইন নয়, সেগুলো অকাল মূত্যু রোধে সহায়তা করেছে। যেসব মানুষ প্রতিদিন এবং যারা সপ্তাহে দুইদিন ব্যায়াম করেন উভয়েরই হৃদরোগ সম্পর্কিত অসুস্থতার ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কেটে যায়। ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও এই একই তথ্য মিলেছে। তবে সুস্থ থাকার জন্য প্রত্যেকরই উচিত দৈনিক ৩০-৪৫মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা।