নিভৃত পল্লী গ্রামের যুবক আসাদ মন্ডল(২৯)। নিজস্ব ৩৫ শতক জমিতে গড়ে তুলেছিলেন নার্সারি। এখান থেকে দিনবদলের স্বপ্নে রোপন করছিলেন নানা প্রজাতির গাছের চারা। ধীরে ধীরে এ গাছগুলো বড় হয়ে ফল নেওয়ার সময়ে পৌঁছাছিলো। এরই মধ্যে একদল শত্রু হানা দিয়েছে এই নার্সারিতে। মুহূর্তে প্রায় দেড় হাজার গাছ কেটে সাবার করে ফেলেছে তারা। যেন চোখের সামনে নিমিষে চুরমার হয়ে গেছে আসাদের সেই স্বপ্ন। সোমবার সকালে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মহেশপুর-কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ‘আসাদ-রওশন’ নামের ওই নার্সারির গাছ কর্তনের ভয়াবহ দৃশ্য। এসময় কাটা গাছের ডালে বসে অঝরে কাঁদছিলেন নার্সারি মালিক আসাদ। সরেজমিনে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত শামছুল হক মন্ডল জীবদ্দশায় মহেশপুর-কৃষ্ণপুর মৌজায় বানিজ্যিকভাবে নার্সারি স্থাপন করে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। এমতাবস্থায় তার মৃত্যুতে ছেলে আসাদ মন্ডল ওই নার্সারীর ব্যবসা অব্যাহত রাখেন। এরই একপর্যায়ে একই গ্রামের এন্তাজ আলীর ছেলে হালিম মিয়া, আয়েন উদ্দিনের ছেলে মুধু মিয়া ও রফিকুল মিয়া গংরা ওই নার্সারি জমিটি নিজেদের বলে দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং ওই জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। কিন্ত এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে গত শনিবার সকাল ১১ টার দিকে প্রতিপক্ষ হালিম মিয়ারা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোডা নিয়ে আসাদের নার্সারিতে ঢুকে প্রায় দেড় হাজার ছোট-বড় গাছ কেটে ফেলায়। এসময় স্থানীয় কাইছুল মন্ডল ও সোহেল মন্ডল বাঁধা দিতে গিলে তাদের কুপিয়ে হাত ভেঙে দেওয়াসহ শারিরীক যখম করেছে। এরই মধ্যে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কাইছুল ও সোহেলকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। হালিম গংরা সন্ত্রাসী কায়দায় এমন কা- ঘটানোর পরও আসাদ মন্ডল ও তার পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আসাদ মন্ডল জানান, পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত হয়ে ওই জমির নার্সারী ব্যবসা করে আসছেন। এরই মধ্যে হালিম, মধু ও রফিুকুল গংরা জোরপুর্বক জমিটি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পায়তারা করে আসছে। বিদ্যামান পরিস্থিতিতে গত শনিবার তার প্রতিপক্ষরা আকস্মিকভাবে হামলা চালিয়ে নার্সার যাবতীয় গাছগুলো কেটে ফেলেছে। এর প্রতিকার চেয়ে রোববার সন্ধ্যায় সাদুল্লাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। এদিকে, অভিযুক্ত হালিম মিয়া বলেন, কাগজপত্র অনুযায়ী ওই জমির মালিক আমরা কিন্তু আসাদ গংরা আমাদের দখলে দিচ্ছেন না। আর ওই গাছগুলো কে বা কারা কেটেছে সেটি জানা নেই। এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় জানান, ওইসব গাছ কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগি আসাদ মন্ডলের একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ক্ষতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।