মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ পূর্বাহ্ন

কেমন ছিল ২০২২, কেমন যাবে ২০২৩

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২

বিদায় ২০২২, স্বাগতম ২০২৩ 

মহাকালে বিলীন হয়ে গেল আরও একটি বছর ২০২১। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার ঘর স্পর্শ করতেই সারাবিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও আতশবাজি আর নীল আলোয় বরণ করেছে নতুন বছরকে। স্বাগতম ২০২৩। বিদায় বছরে পাওয়া না-পাওয়ার হিসাব চুকিয়ে নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশা নিয়ে এসেছে ২০২৩। নতুন বছর মানেই নতুন উদ্দীপনা, নতুন প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে চলা। পেছনে ফেলে আসা বছরের ভুল, হতাশা, দুঃখ, গ্লানিকে দূরে ঠেলে নতুন উদ্যমে সাহস নিয়ে পথচলা। দেশজুড়ে শীতের মাঝে উত্তাপ নিয়ে এসেছে ঈসায়ী বা খ্রিস্টাব্দ নতুন বছর। সভ্যতার ইতিহাস বলে, অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার এই স্পৃহা মানুষকে নিয়ে এসেছে এতদূর। তাই নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে বিশ্বের অন্যান্য জাতির মতো বাঙালিরাও। শিক্ষাঙ্গন, রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক নানা ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাবে- এমন প্রত্যাশা দেশের সব মানুষের। গত বছর যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল তার অনেকখানি হয়তো পূরণ হয়নি। কিন্তু তাতে কি? নতুন উদ্যম নিয়ে এগিয়ে গেলে সাফল্য ধরা দেবেই।
অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক এম এ খালেক বিশ্লেষণ করেছেন কেমন ছিল ২০২২, কেমন যাবে ২০২৩ । বিশ্লেষণটি দৈনিক খবরপত্রের পাঠকদের জন্য ‘ দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সৌজন্যে তুলে ধরা হলো: ‘কালের আবর্তে আরও একটি বছর চলে গেল। আমরা একটি বছর পার করে খ্রিষ্ট্রীয় নতুন বছর ২০২৩-এ পদার্পণ করতে যাচ্ছে। প্রতিটি নতুন বছর বিশ্ববাসীর জন্য সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে আসে। কিন্তু এবার নববর্ষ এসেছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে। আমরা যে বছরটি পেরিয়ে এলাম তা ছিল নানা কারণেই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, ঘটনাবহুল তো বটেই। ২০২২ পঞ্জিকা বছর আমাদের জন্য ছিল অত্যন্ত উদ্বেগের। কারণ চীন থেকে যে অতিমারির সূচনা হয়েছিল, সেই কোভিড-১৯ আমাদের দেশে হানা দেয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো কোভিড-১৯ বাংলাদেশেকেও ভুগিয়েছে। বাংলাদেশের প্রচুর সংখ্যক মানুষ কোভিড-১৯ (করোনা)-এ আক্রান্ত হয়ে অকালে ইন্তেকাল করেছেন। করোনার কারণে বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হতে পারেনি। অফিস-আদালত অনেক দিন বন্ধ রাখতে হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী নানা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে করোনা অতিমারি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে ততটা ক্ষতি করতে পারেনি। তবু যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনোভাবেই উপেক্ষণীয় নয়। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব একটা দুর্যোগ সহনীয় নয়। সামান্য আঘাতেই আমাদের দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। অর্থনীতি স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হতে পারেনি। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সাংঘাতিকভাবে বৃদ্ধি পায়। অনেকেই কর্মচ্যুত হয়েছেন। কারও বা মজুরি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। এই অবস্থায় ২০২২ সালের শুরুতেই বাংলাদেশ করোনার প্রভাব থেকে অনেকটাই মুক্তির পথে ধাবিত হচ্ছিল। এ অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু বিশ্বব্যাপী তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। বাংলাদেশও সেই প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি। ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সদস্য হওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল। রাশিয়া দৃশত এ কারণেই ইউক্রেন আক্রমণ করে। কারণ রাশিয়া কোনোভাবেই চাইতে পারে না যে, ন্যাটো তার সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হোক। তবে রাশিয়া এভাবে ইউক্রেন অক্রমণ করবে, এটা বিশ্লেষকের অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেনি। আর রাশিয়া ভেবেছিল, ইউক্রেন দখল করা তাদের জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র। অনেকেটা ‘এলাম দেখলাম আর জয় করলাম’ ইউক্রেন দখল করে নেয়া যাবে। কিন্তু তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন দখল করার পর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার ওপর ব্যাপক আকারে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। তাদের ধারণা ছিল, অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করার মাধ্যমে রাশিয়াকে খুব সহজেই বশে আনা যাবে। কিন্তু তাদের সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। রাশিয়া অবিশ্বাস্যভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অবরোধের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে জ্বালানি তেল এবং গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়। রাশিয়া বিশ্ব জ্বালানি তেলের এক-দশমাংশ জোগান দিয়ে থাকে। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার ফলে ইউরাপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের জন্য হাহাকার শুরু হয়। রাশিয়া কর্তৃক জ্বালানি তেল ও গ্যাসের জোগান কমিয়ে দেয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী পরিবহণ সংকট দেখা দেয়। এই পরিবহণ সংকটের কারণে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই পণ্য মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয়, খাদ্যপণ্যের সরবরাহের ক্ষেত্রে। বিশ্বের দানাদার খাদ্যের ৩০ শতাংশই জোগান দেয় রাশিয়া ও ইউক্রেন। কিন্তু এই যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের উৎপাদিত খাদ্যপণ্য বিশ্ববাজারে প্রেরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। ইউক্রেনে গত মৌসুমে মোট ৮ কোটি ৬০ লাখ টন খাদ্য পণ্য উৎপাদিত হয়। কিন্তু এর মধ্যে অন্তত ২ কোটি টন খাদ্য পণ্য দীর্ঘদিন বন্দরে জাহাজ ভর্তি অবস্থায় ছিল। পরে অবশ্য রাশিয়া কিছুটা নমনীয় হওয়ায় ইউক্রেন কিছু খাদ্যপণ্য রপ্তানি করতে পেরেছে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে চলতি মৌসুমে ইউক্রেনে খাদ্য উৎপাদন সাংঘাতিকভাবে বিঘিœত হয়েছে। ফলে আগামী বছর বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের আকাল দেখা দিতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। আমরা যে পঞ্জিকা বছর পেরিয়ে এলাম, অর্থনীতিতে তার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল অস্বাভাবিক উচ্চ মাত্রার মূল্যস্ফীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়, বিগত ৪০ বছরে আর কখনোই এমন উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি প্রত্যক্ষ করা যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক এক-শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এলেও তা সাময়িক বলেই অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি নানা সমস্যা এবং সংকট দেখা দেয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থনীতির প্রচলিত ধারণাকে মিথ্যে প্রমাণ করেছে এই যুদ্ধ। যেমন, যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মার্কিন ডলারের বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশ্বের অন্তত ৬২ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষিত হয় মার্কিন ডলারে। মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি পেলে রাশিয়ান রুবলের মূল্য হ্রাস পাওয়ার কথা। কিন্তু এবার ঘটেছে উল্টো ঘটনা। মার্কিন ডলারের মূল্য যেমন বেড়েছে, তেমনি রাশিয়ান রুবলের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত একই সঙ্গে মার্কিন ডলার এবং রুবলের মূল্য বাড়ে বা কমে না। এদের সম্পর্ক ছিল বিপরীতমুখী। কিন্তু এবার তার ব্যত্যয় ঘটেছে। রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে রুবলের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের শর্তারোপ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অর্থনীতিতে সৃষ্ট অস্বাভাবিক উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বিশেষ করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা নীতি সুদ হার বাড়িয়েছে। ১ বছরের মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (ফেড) অন্তত ৬ বার তাদের নীতি সুদ হার বাড়িয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বিশ্বের অন্তত ৭৭টি দেশ তাদের নীতি সুদ হার বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও দু’বারে নীতি সুদ হার দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। নীতি সুদ হার বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনীতিতে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের একটি সাধারণ পদ্ধতি। শিডিউল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বা ধার গ্রহণের ক্ষেত্রে যে সুদ প্রদান করে, সেটাই নীতি সুদ হার। নীতি সুদ হার বাড়ানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। নীতি সুদ হার বাড়ানো হলে শিডিউল ব্যাংকগুলোর পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেশি সুদ প্রদান করতে হয়। ফলে ব্যাংকগুলো যখন উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণ প্রদান করে, তখন তুলনামূলক বেশি হারে সুদ আরোপ করে। এভাবে চূড়ান্ত পর্যায়ে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ কমে যায়। ভোক্তা চাইলেও আগের মতো পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারে না। নীতি সুদ হার বাড়ানোর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি খুব একটা না কমলেও তাদের অর্থনীতি বিকল্প পথে উপকৃত হয়েছে। নীতি সুদ হার বাড়ানোর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় বেশি সুদ দিচ্ছে। এতে উৎসাহিত হয়ে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা অন্য দেশ থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিজ দেশে বিনিয়োগ করছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর আমানত সংকট নিরসন হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদ হার বাড়ালেও আমানতের ওপর প্রদেয় সুদ হার এবং ব্যাংক ঋণের সুদের আপার ক্যাপ তুলে দেয়নি। ফলে নীতি সুদ হার বাড়ানোর কৌশল কোনো কাজে আসেনি। এতে বরং ব্যাংক ঋণ প্রবৃদ্ধি উচ্চতর হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিপরীতে তুলনামূলক কম সুদে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে বলে অনেকেই ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে তা বিদেশে পাচার করছেন। করোনার কারণে ব্যাংকিং সেক্টরে নানা ধরনের ছাড় দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা ঋণখেলাপি তাদের ঋণ পরিশোধের অবকাশ দেয়া হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই ঋণখেলাপিদের নানাভাবে সুবিধা দেয়া হচ্ছিল। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঋণের কিস্তি আদায় না করেই আইনি সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনা। কিন্তু সেই উদ্যোগও সফল হয়নি। বরং ব্যাংকিং সেক্টর এখন মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। কয়েকটি ব্যাংকে ভয়াবহ দুর্নীতি এবং অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ গ্রাহক এবং আমানতকারীদের মাঝে এমন একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে, ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আগামীতে ব্যাংক তার গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ ফেরত দিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দানকালে বলেছেন, গুজবের কারণে ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে আমানতকারীরা। এখন তাদের ভুল বুঝতে পেরে তারা আবারও ব্যাংকে ফিরে আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর দেউলিয়া হয়ে যাবে, এমন গুজব যারা ছড়াচ্ছেন, তারা সঠিক কাজ করছেন না। কারণ বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত হলেও কোনো ব্যাংকই দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। উল্লেখ্য, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের একটি ব্যাংকও দেউলিয়া হয়নি। সবচেয়ে বেশি ব্যাংক দেউলিয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। গত এক শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ হাজার ব্যাংক দেউলিয়া হয়েছে। মার্কিন ব্যাংকিং ব্যবস্থা হচ্ছে ইউনিট ব্যাংকিং ব্যবস্থা। অর্থাৎ সেখানে মাত্র কয়েকটি শাখা নিয়ে একটি ব্যাংক স্থাপিত হয়। কাজেই খুব সহজেই একটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। আর ব্রিটিশ ব্যাংকিং ব্যবস্থা হচ্ছে ব্র্যা ব্যাংকিং ব্যবস্থা। সেখানে একটি ব্যাংকের প্রচুর সংখ্যক শাখা থাকে। কাজেই কোনো ব্যাংকের কিছু শাখা লোকসান দিলেও কোনো সমস্যা হয় না। বাংলাদেশ ব্রিটিশ ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনুসরণ করে। কাজেই এখানে কোনো ব্যাংক সহজেই দেউলিয়া হবে না। তবে ব্যাংকিং সেক্টরের সার্বিক অবস্থা মোটেও ভালো নেই। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাংকিং সিস্টেম বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরে যেসব আইনি পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই এই সেক্টরের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির মানুষ এখান থেকে অর্থ নিয়ে দেশের বাইরে পাচার করে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যক্তি খাতে ঋণ গ্রহণে মাত্রা বেড়ে গেছে। ব্যক্তি খাতে গৃহীত ঋণের অর্থ যদি উৎপাদনশীল শিল্পে ব্যবহৃত হতো, তাহলে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু এই টাকা বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকি বিদেশে পাচার হচ্ছে। চলতি মুদ্রানীতিতে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১ শতাংশ। বর্তমান মুদ্রানীতিতে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ১ শতাংশ নির্ধারিত থাকলেও একপর্যায়ে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হয়। পরে অবশ্য এই হার কিছুটা কমেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কালে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণ প্রবৃদ্ধির এই ধারা ইতিবাচক বলে বিবেচনা করা যেত, যদি তা সঠিকভাবে বিনিয়োগে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে শিল্পে ব্যবহার্য ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি কমেছে ৭৬ শতাংশ। কাঁচামাল এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি কমেছে ১৪ শতাংশেরও অধিক। তার অর্থ হচ্ছে উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগ অথবা বিদ্যমান বিনিয়োগ সম্প্রসারণের চেষ্টা করছেন না। তাহলে ব্যক্তি যে ব্যাংক ঋণ দেয়া হচ্ছে তা কোথায় যাচ্ছে? এগুলো বাজারে সার্কুলেট হচ্ছে অথবা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা বারবার বলে আসছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাংক ঋণের আপার ক্যাপ তুলে দেয়া জরুরি। কিন্তু তা না করে ব্যাংক ঋণের আপার ক্যাপ তুলে না দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমার নিজের স্বার্থ বুঝি; কিন্তু দেশের স্বার্থ বুঝি না। ব্যাংক ঋণের সুদের হার কম থাকলে বিনিয়োগ বেশি হবে, এটা বুঝি; কিন্তু গৃহীত ব্যাংক ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহারের নিশ্চয়তা না পেলে যে তা বাজারে ছড়িয়ে পড়বে অথবা বিদেশে পাচার হবে, সেটা বুঝলাম না। ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হারের অন্যতম কারণ হচ্ছে খেলাপি ঋণের ব্যাপক উপস্থিতি। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানোর পরিবর্তে যদি বাড়ার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কখনোই টেকসইভাবে কমবে না। খেলাপি ঋণ ব্যাংকের মুনাফা নানাভাবে খেয়ে ফেলে। বিনিয়োগ সক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই এ মুহূর্তে ঋণখেলাপিদের কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। খেলাপি ঋণের হার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণীয় মাত্রায় নিয়ে আসতে পারলে ব্যাংকিং সেক্টরের অনেক সমস্যা এমনিতেই সমাধান হয়ে যাবে। বৃহৎ ঋণখেলাপিদের অধিকাংশই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। তারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক থেকে গৃহীত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেন না। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা দেশের শত্রু। তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে- এটা খুবই ভালো কথা। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি মফিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের কথা বলে কেউ যদি ব্যাংক লুটে শামিল হয়ে যায়, তাদের কখনোই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তি বলা যাবে না।’ কারণ মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দেশকে ভালোবাসতে, দেশের মানুষকে তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার শিক্ষা দেয়। কোনোভাবেই রাষ্ট্রীয় সম্পদ বা ব্যাংকের অর্থ লুটপাটের শিক্ষা দেয় না। যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি তাদের সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বয়কট করা যেতে পারে। রাষ্ট্রের নিকট থেকে তারা যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে তা প্রত্যাহার করা যেতে পারে। একজন ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কখনোই দেশপ্রেমিক হতে পারেন না। তারা দেশের শত্রু। বিশেষ সুবিধার আওতায় ঋণখেলাপিদের ছাড় না দিয়ে তাদের কঠোর আইনি ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে।
বিদায়ী বছরে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছিল উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এই মূল্যস্ফীতি ঘটেছিল মূলত সাপ্লাই সাইড ইফেক্টের কারণে। অর্থাৎ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্য উৎপাদন স্বাভাবিকই ছিল; কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি করেছিল পরিবহন সংকট। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে উৎপাদিত পণ্য সঠিকভাবে বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠানো যায়নি। ২০২৩ সালে পরিবহন সংকটের পাশাপাশি উৎপাদন হ্রাসজনিত সমস্যাও প্রকট হয়ে উঠবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে ব্যাংকিং সেক্টরের নীতি সুদ হার ব্যাপকভাবে বাড়ানোর তাদের দেশের মূল্যস্ফীতি বর্তমানে কিছুটা কমে এসেছে। কিন্তু ব্যাংক ঋণের প্রবাহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম হওয়ার দেশটিতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। মার্কিন অর্থনীতি পরপর দুই প্রান্তিকে সংকুচিত হলে, তাকে তারা মন্দার আশঙ্কা করে। এরই মধ্যে মার্কিন অর্থনীতি তৃতীয় প্রাপ্তিকে সংকুচিত হয়েছে। বিশ্বের অধিকাংশ অর্থনীতিবিদই মনে করছেন, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোও এই মন্দা থেকে রক্ষা পারে না। বাংলাদেশ ২০২২ পঞ্জিকা বছরে নানা সমস্যা মোকাবিলা করেছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ নিয়ে। ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫৪৬ কোটি মার্কিন ডলার। গত ২১ ডিসেম্বর তা ৩ হাজার ৪০১ কোটি মার্কিন ডলারে নেমে আসে। অবশ্য আইএমএফ এবং দেশের অধিকাংশ অর্থনীতিবিদের মতে, আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। বিবেচ্য সময়ে প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ৮৫ দশমিক ৬০ টাকা থেকে ১০২ দশমিক ৮৯ টাকায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। কল মানি রেট ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই-নভেম্বর সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ৮৬০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটা ২০ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২২ সালের জুলাই-নভেম্বর সময়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৭৮৯ কোটি মার্কিন ডলার। প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ। ২০২১ সালের জুলাই-নভেম্বর সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১ হাজার ৯৭৯ কোটি মার্কিন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০২২ সালের একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ১৯৪ কোটি মার্কিন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ২০২১ সালের জুলাই-অক্টোবর সময়ে আমদানি ব্যয় হয়েছিল ২ হাজার ৫৮৩ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছিল ৫১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২০২২ সালের একই সময়ে আমদানি ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৭৫৬ কোটি মার্কিন ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২০২১ সালের জুলাই-অক্টোবর সময়ে ৩৮৩ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২২ সালের একই সময়ে এটা ছিল ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার। রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ২০২১ সালের জুলাই-অক্টোবরে ছিল ৭৯ হাজার ৬২২ কোটি টাকা। ২০২২ সালে তা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে ৯০ হাজার ৯১৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। মূল্যস্ফীতি ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তা ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশে উন্নীত হয়।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ২০২৩ সালে সবচেয়ে জটিল সমস্যা সৃষ্টি হবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সাংঘাতিকভাবে কমে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংকট সৃষ্টির জন্য অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করবে অর্থ পাচার রোধ করতে না পারা। গত এক বছরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপার্জিত ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে আসেনি। এই অর্থের বিপরীতে স্থানীয় বেনিফিশিয়ারিদের হুন্ডির মাধ্যমে টাকা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে জটিল এবং অপ্রতিরোধ্য সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয়ভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। যদি আমরা মাঝে মাঝেই জিরো টলারেন্স নীতির কথা শুনছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করছেন। আমরা যদি অর্থনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে চাই, তাহলে প্রথমেই দুর্নীতি দমনে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। ২০২৩ সালে অর্থনীতির জন্য অন্যতম সমস্যায় পরিণত হবে অর্থ পাচার। আমাদের দেশের সাধারণ একটি প্রবণতা হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনের আগের বছর দুর্নীতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। একই সঙ্গে অর্থ পাচারও বৃদ্ধি পায়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একবার প্রসঙ্গক্রমে বলেছিলেন, কানাডার বেগমপাড়ায় যেসব বাংলাদেশিদের বাড়ি রয়েছে, তাদের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। একজন সরকারি চাকরিজীবী যদি সৎভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাহলে তার পরিবারের ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করাই কঠিন। তিনি কি করে কানাডার মতো দেশে বাড়ি ক্রয় করেন? এই প্রশ্ন রাষ্ট্রীয়ভাবে উত্থাপন করা হয়নি। এমনকি তাদের নাম পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হয়, তাহলে দুর্নীতি কীভাবে দূর করা সম্ভব হবে? দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে কোনোভাবেই দেশের অর্থনীতি গতিশীল হবে না। শুধু জিডিপি প্রবৃদ্ধি দিয়ে কখনোই একটি দেশের কার্যকর উন্নয়ন পরিমাপ করা যায় না।’
সর্বশেষেও বলতে হয়, ‘মুকুলিত সব আশা,/ স্নেহ, প্রেম, ভালবাসা,/ জীবনে চির স্মৃতি হয়ে রয়।ৃ পুরাতন বর্ষ বিদায় লয়।/নববর্ষের আগমন হয়।’ সব আশা-স্নেহ-ভালোবাসা স্মৃতি হয়ে থাকুক। আগামী আসুক পুষ্পশোভিত হয়ে। প্রজ্বলিত সূর্যের আলোকচ্ছটায় আলোকিত হোক বিশ্ব। বিশ্বের যাবতীয় মানুষের কল্যাণ হোক। বাংলাদেশ উত্তরোত্তর সফলতার দিকে এগিয়ে যাক। বিদায় ২০২২; স্বাগত ২০২৩।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com