শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন

চর বিজয়ে অবাধে চলছে ছোট মাছ নিধন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩

নিষিদ্ধ ও ছোট ফাঁসের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা
পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়কে ঘিরে চলছে মাছ ধরার মহোৎসব। নিষিদ্ধ ও ছোট ফাঁসের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। তারা বলছেন, সমুদ্রের ভারসাম্য রক্ষায় ছোট মাছ মারা বন্ধ না করলে সমুদ্র থেকে বিলীন হবে নানান প্রজাতির মাছ।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সরেজমিন দেখা যায়, চর বিজয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট ফাঁসের জাল টেনে মাছ ধরা হচ্ছে। জেলেরা বড় মাছগুলো নিয়ে গেলেও বিভিন্ন স্থানে পড়ে আছে ছোট ছোট বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
চর বিজয়ের পশ্চিম পাশে দেখা যায়, কয়েকজন জেলে ছোট মাছ মারার জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা তাদের পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তারা বলেন, তাদের জালে শুধু চিংড়ি মাছ ধরা পড়ে, আর কোনো ছোট মাছ ওঠে না।
আব্দুল কুদ্দুস নামের এক জেলে জাগো নিউজকে বলেন, চর বিজয় ইউ আকৃতির। আকৃতিগত কারণে এটি মাছের প্রজননের অন্যতম অভয়াশ্রম। যদি এখানে ছোট মাছগুলো মারা না হয় তাহলে সমুদ্রে দিন দিন বড় মাছ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনরা মাছ ধরে নিয়ে যান।’
এভাবে অবাধে ছোট মাছ শিকার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পর্যটকসহ পরিবেশবাদীরা। ঢাকা থেকে আসা মাহবুবুর রহমান নামের একজন পর্যটক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি কুয়াকাটা থেকে চর বিজয়ে ঘুরতে এসেছি। এসে দেখি যেখানে সেখানে অনেক ছোট মাছ মরে পড়ে আছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম জেলেরা এগুলো মেরে ফেলে গেছেন। তখন খুব খারাপ লাগলো। কারণ এগুলো সমুদ্রের সম্পদ। এগুলো এখনই নষ্ট করলে ভবিষ্যতে তো সমুদ্রে মাছ সংকট দেখা যাবে।’
সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রকৃতি এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ওই চরে বিভিন্ন সময়ে গিয়ে দেখেছি জেলেরা ভাটার সময়ে জাল পেতে রাখেন। জোয়ার এলে মাছ আটকে যায় এবং সেখানে ছোট-বড় সব সাইজের মাছ ধরা পড়ে। একদম ছোট পোনাগুলোও মারা হয়। তাহলে ৬৫ দিন বা ২২ দিন এই যে অবরোধগুলো সরকার দেয় সেগুলোর কীসের দরকার? অন্য জেলেরা শুধু শুধু কষ্ট করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই চরটিকে লিস দেওয়া হয়। যারা লিস নিয়েছেন তারা অন্য জেলদের ওখানে মাছ ধরার কারণে মারধরও করেছেন। একটি সাগর কীভাবে বিক্রি হয় আমাদের জানা নেই।’ এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা প্রতিমাসে কয়েকবার নির্বাহী মাজিস্ট্রেট নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। ওখানে থাকা বাসা ও খুঁটা (খুঁটি) কেটে দিয়ে এসেছি। তবে জায়গাটা একটু দূর হওয়ায় সার্বক্ষণিক আমাদের নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। আর সাগর কারও বিক্রি বা লিস দেওয়ার ক্ষমতা নেই। যদি কেউ দিয়ে থাকেন তা আমাদের জানা নেই।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com