ইভিএম কেনা থেকে সরকারের পিছু হটাকে বিতর্কিত ইভিএমের বিষয়ে বিরোধীদলগুলোর প্রবল আপত্বির বিজয় উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, আমরা মনে করি পুরো পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সরব। এই সরকার চাইলেও গায়ের জোড়ে ‘১৪ ও ১৮’ সালের মতো নির্বাচন করতে পারবে না। কাজেই আমাদের এখন একটাই দায়িত্ব, দেশের প্রতিটি জনগনকে সচেতন করা। আমার ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাদে দেবো। এই স্লোগানকে বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা।
গতকাল শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর পাবলিবক লাইব্রেরি মাঠে পরিষদের রংপুর বিভাগীয় কমিটি আয়োজিত সদস্য ফরম উম্মোচন ও শীত বস্ত্রবিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। পরে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় উপ-কমিটির সদস্য সচিব এবং সমন্বয়ক হানিফ খান সজিবের সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাসান, শেখ রাশেদ খান, যুব পরিষদের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান, মাহফুজুর রহমান, ছাত্র পরিষদের সভাপতি দ্বীন ইয়ামিন মোল্লা, সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতার হোসেন, রংপুর বিভাগীয় উপকমিটির সমন্বায়ক মাসুদ মোনাফ, ইব্রাহিম খোকন প্রমুখ। এ সময় ভিপি নুর আরো বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন ‘১৪ ও ১৮’ সালে হয় নাই, তার মানে এটা না যে আজীবন হবে না। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিতর্কিত ইভিএমের বিপক্ষে যখন তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে, ইভিএম এ ভোট হবে না, ইভিএমের ভোটে অংশ গ্রহণ করবে না যখন দাবি জানিয়েছে, তখন কিন্তু সরকার ইভিএম কেনা থেকে পিছিয়ে এসেছে। আমরা মনে করি এটা সরকারের বোধোদয় ও ইতিবাচক পদক্ষেপ আমরা মনে করি। যদি বিরোধী দলগুলো রাজপথে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পারি। তাহলে ১৯৯১-এর মতো বর্তমান সরকারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করতে বাধ্য হবে। সেজন্য জনগনের আন্দোলন লাগবে। রাজপথের গণআন্দোলন লাগবে। সেই আন্দোলনকে বৃহত্তর রংপুর অ লে সংগঠঠিত করার জন্যই গণ অধিকার পরিষদ বিভাগ ও জেলা সফর শুরু করেছি। নূর বলেন, বর্তমান সরকার টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে, উন্নয়নের কথা বলে তারা দেশকে খাদের কিনারে নিয়ে এসেছে। জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সামনে রোজা, আরো দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে। জনজীবনে দুর্ভোগ আরো বাড়বে। বর্তমান সরকার বিশেষ করে ‘২০১৪ ও ১৮’ সালে বিনাভোটে নির্বাচন করে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে একটি কর্তৃত্ববাদি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় করিয়েছে। আজকে সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশের মানুষের মতো একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। নুর বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছরে গম ৩১ বছরে দুটি দল পর্যায়ক্রমেদেশের ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু মানুষের যে আকঙ্কা ছিল। সে স্বপ্ন ও আকাঙ্কা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ঝাপিয়ে পড়েছিল, দেশ স্বাধীন করেছে। সেই স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এখনো মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা নিশ্চিত হয়নি। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
নুর বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, দেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা অন্য সকল বিরোধীদলের সাথে মিলে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ এবং যুগপৎ আন্দোলন করবো। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে গণ অধিকার পরিষদ আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে। গণ অধিকার পরিষদ তরুণদের একটি নতুন দল হিসেবে উন্থান হলেও সারা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ যেভাবে এইদলকে গ্রহণ করছে। তাতে আমরা বিশ্বাস করি, ভোটের পরিবেশ তৈরি হলে আগামীতে গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্বেই সরকার গঠিত হবে। এবং আমরা জনগনের আশা আকঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং মুক্তিযুদ্ধে স্পিড ধারণ করে কাজ করে যাবো।