মুজিবনগর আম্রকাননসহ জেলার আম বাগানগুলোর আধিকাংশ গাছ মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে আম বাগানগুলো। বাগানগুলোতে মধু সংগ্রহে মৌ মাছিদেরও ছোটাছুটি শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে আম চাষিদের ব্যস্ততা। এটি মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননসহ জেলার আম বাগানগুলোর সাধারণ দৃশ্য। বাগানের মালিকেরা আমগাছে ওষুধ ছিটানোসহ বিভিন্ন ধরণের যত্ন-আত্মি বাড়িয়েছে মুকুল ধরে রাখতে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন- মাঘ মাসের শেষ পর্যন্ত প্রতিটি গাছেই পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটে গাছে গাছে আমের গুটিতে ভরে যাবে।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, আমচাষে প্রথমে আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর কথা। এ দু’জেলায় আম উৎপাদন হয় বেশি। কিন্তু স্বাদের দিক থেকে মেহেরপুরের আমের সুখ্যাতি জগত জুড়ে। মেহেরপুরের আম সুস্বাদু হওয়ায় এ জেলার আমের চাহিদা দেশের সব জেলা ছাড়িয়ে ইউরোপ মহাদেশেও তার সুখ্যাতি ছড়িয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমের বাগানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেহেরপুরের মুজিবনগরের আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। মেহেরপুর জেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সব জাতের আমেরই চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর কৃষিজমিতে তৈরি করা হচ্ছে আমের বাগান। এখানকার মাটির গুণেই হিমসাগর, লেংড়া, বোম্বাই, তিলি বোম্বাই ইত্যাদি জাতের আম খুবই সুস্বাদু। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, আশ্বিনা জাতের বাগান বেশি থাকলেও গবেষণাকৃত বারি-৩, বারি-৪ জাতের বাগান তৈরির ক্ষেত্রেও আগ্রহী হয়ে উঠছে অনেকে। সেই সঙ্গে নতুন নতুন বাগানগুলো তৈরি হচ্ছে বনেদি ও হাইব্রিট জাতের।
মেহেরপুরের সদর উপজেলার গোভীপুর গ্রামের আমচাষি মুকুল বিশ^াস জানান, শীতের তীব্রতা থাকলেও এবার অনেক আমগাছে আগাম মুকুল আসছে । আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার গাছগুলোতে মুকুলের সমারোহ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, মূলত তিনটি পর্যায়ে আমের মুকুল আসে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সব গাছে মুকুলে ভরে যাবে। জেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। নিয়মিত যত্ন নিলে আমের অফ ইয়ার বলে কিছু থাকে না।