দিনাজপুরে নবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক সীতার কোট বৌদ্ধ বিহারের বেহাল অবস্থা। সংস্কারের অভাবে ভেঙে যাচ্ছে মূল স্থাপনার বিভিন্ন অংশ। সীমানা বেষ্টনী না থাকায় পরিণত হয়েছে চারণভূমিতে। দীর্ঘদিনেও হয়নি সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। তবে স্থানীয়রা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজসহ নিদর্শনটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন। নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের শালবন সংলগ্ল উপজেলার ফতেপুর মাড়াষ মৌজায় প্রায় ৩ একর ভূমিজুড়ে সীতার কোর্ট বিহার। জনশ্রুতি রয়েছে- রামপত্নী সীতাকে পঞ্চবটীর বনের গভীরে বনবাস দিয়ে থাকার জন্য তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল একটি কুঠুরি। সেই কুঠুরিই আজকের সীতার কোর্ট। প্রায় সাড়ে তিনশ বর্গফুটের বিহারটিতে ছোট বড় ৪১টি কক্ষ রয়েছে। নিপুণ হাতের গাঁথুনি ইমারতের লম্বা, মধ্যম ও ছোট ছোট ইট এবং চুনি-সুরকি দ্বারা বিহারটি নির্মিত। জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুসন্ধানকারী একটি দল নিদর্শনের আংশিক অংশ খননের পর নিশ্চিত হয় এটা একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। কিন্তু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এখনো তাদের তীর্থস্থান মেনে আসেন এ বিহারকে। খননের সময় বিহারের কিছু অংশ সংস্কার করা হয়। ফলে ঐতিহাসিক এ নিদর্শনটির মূল স্থাপনা ভেঙে যাচ্ছে। একজন নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও সীমানা বেষ্টনী না থাকায় বিহারটি চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে বিপুল পর্যটক আনাগোনা থাকলেও বিহারে নেই পানি, শৌচাগারসহ বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা। ফলে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীর ভোগান্তির শেষ নেই। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ বিপ্লব কুমার সাহা জানান, প্রতিবছর বৈশাখ মাসে আশপাশের কয়েকটি জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী এখানে সমাবেত হন। কিন্তু এখানে দর্শনার্থীর জন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। তিনি পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ অবহেলিত বিহারটির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান জানান, অবহেলিত এ সীতার কোর্ট বিহারটি সংস্কার ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে যতটা সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী ঐতিহাসিক সীতার কোট বৌদ্ধ বিহারটি সংস্কারসহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা হলে তা থেকে সরকার রাজস্ব আয় ও বেকারদের কর্মসংস্থানের পদ সৃষ্টি হবে।