শেষ হয়ে গেল এক বর্ণিল অধ্যায়। নিভে গেল ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর জীবন প্রদীপ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন এই অভিনেতা। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইল্লাহি রাজিউন। সাদেক বাচ্চুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বরেণ্য এই অভিনেতাকে হারিয়ে শোক প্রকাশ করছেন তার ভক্ত ও অনুরাগীরা। প্রিয় মানুষের মৃত্যু সবার হৃদয়েই বেদনা জাগায়। চিত্রনায়িকা পূর্ণিমাও বেদনাহত। চোখে ভাসছে সাদেক বাচ্চুর সঙ্গে ফেলা আসা নানা রঙের দিনগুলি। পূর্ণিমা এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘সম্ভবত ১৯৯৯ সালে উনার সঙ্গে প্রথম ছবি করেছি। বা ২০০০ সাল হবে। প্রথম ছবিতেই আমার নান ছিলেন তিনি। এরপর বাবা-মেয়ে হিসেবে কাজ করেছি আমরা। অনেক ছবিতে ভিলেন ছিলেন। তার সঙ্গে কাজের দিনগুলো অসাধারণ স্মৃতি হয়ে আছে।
শুটিং সেটে তিনি ছিলেন দারুণ মিশুক একজন মানুষ। কিছু একটা ভুল হলে শুধরে দিয়েছেন। তার কাছে অনেককিছু শিখেছি। মেয়ের মতো আদর করতেন। কোথাও দেখা হলেই ‘পূর্ণি…..’ বলে চিৎকার করে উঠতেন। মাথায় হাত রেখে আদর করতেন। সেসব খুব মনে পড়ছে এখন। কী অদ্ভূত! জায়গা শূন্য করে দিয়ে মানুষ হারিয়ে যায় চোখের পলকে!’ পূর্ণিমা আরও বলেন, ‘অভিনয়ের বাইরেও চমৎকার সম্পর্ক ছিলো আমাদের। হয়তো অনেকেই জানেন না যে সাদেক বাচ্চু ব্যক্তিজীবনে অনেক স্ট্রাগল করা একজন মানুষ। পরিবারের দায়িত্ব বইতে বইতে নিজে বিয়ে করেছেন দেরিতে। বয়সের তুলনায় উনার ছেলেমেয়েরা কিন্তু বেশ ছোট। আমাকে তিনি সেই গল্প শোনাতেন প্রায়ই। কারণ আমিও পরিবারের অনেক দায়িত্ব রয়েছি। তিনি আমাকে সাহস দিতেন।’
সাদেক বাচ্চুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পূর্ণিমা বলেন, ‘একজন অনবদ্য অভিনেতা সাদেক বাচ্চু, চমৎকার মনের সাদেক বাচ্চুকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক বড় ক্ষতি। এই করোনা আমাদের কত ক্ষতি দিয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি কত প্রিয়জন কেড়ে নিলো। মনটা খুব অশান্ত হয়ে আছে বাচ্চু ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে। আল্লাহ আমাদের বাচ্চু ভাইকে যেন জান্নাতবাসী করেন।’