পিতা-মাতার কাছে ছেলেমেয়ের চেয়ে মূল্যবান আর কিছু নেই। প্রত্যেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানের জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলেন। ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলেন। কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত করেন, যাতে তারা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারে। শুধু ছেলেমেয়ের সুখের কথা চিন্তা করলে এই ছেলেমেয়ে সদকায়ে জারিয়া হতে পারে না। তাকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সন্তান নিজে থেকে ভালো মানুষ হতে পারে না। তাকে তৈরি করে নিতে হয়। সৎ ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলেই কেবল তার থেকে সদকায়ে জারিয়া পাওয়ার আশা করা যেতে পারে। শুধু হাত তুলে দোয়া করলেই সদকায়ে জারিয়া হয় না। আরো কিছু কাজ করতে হয়। তিনটি কাজ সদকায়ে জারিয়া- ১. খালখনন বা টিউবওয়েল বসানো অর্থাৎ মানুষের পানির ব্যবস্থা করা। ২. এমন কিছু লিখে যাওয়া, যা থেকে মানুষ উপকৃত হবে, কল্যাণ লাভ করবে। যতদিন এই দুটো কাজ মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে ততদিন কবরবাসী পিতা-মাতার কবরে পৌঁছে যাবে সদকায়ে জারিয়ার বিনিময় মূল্য। ৩. নেক সন্তান, যে সন্তান বালেগ হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে ততদিন তার পিতা-মাতার কবরে সমপরিমাণ নেকি পৌঁছে দেবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। যে সন্তান পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে, হালাল খাবার খায়, হারাম থেকে দূরে থাকে, শরিয়তের বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালন করে, সুদ-ঘুষ, যেনা-ব্যভিচার, চুরি ডাকাতি, ছিনতাই রাহাজানি করে না, ফজর থেকে নিয়ে সারা দিনরাত প্রতিটি কাজ আল্লাহ তায়ালার হুকুমমাফিক পালন করে, তার করা প্রতিটি সৎ কাজের বিনিময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার পিতা-মাতাকে পৌঁছে দেবেন। সন্তান হকের পথে সংগ্রাম করল, দান-খয়রাত করল তার বিনিময় সাথে সাথে পৌঁছে যাবে পিতা-মাতার কবরে। হাসিমুখে কথা বলাও সদকা, আর এই সদকার বিনিময়টুকুও রাব্বুল আলামিন লাখো কোটি গুণ বৃদ্ধি করে পৌঁছে দেন পিতা-মাতার কবরে। লেখক : শিবপুর, নরসিংদী থেকে