বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, বাজার সিন্ডিকেটের কুশীলবদের বিরুদ্ধে আমাদের আঙুল তুলতে হবে। এখনো আগের মতোই চাঁদাবাজি চলছে। কারওয়ান বাজার থেকে দেশের বিভিন্ন বাজারে কয়েকটা স্টেকহোল্ডারকে এখনো চাঁদা দিতে হয়। এসব কারণে নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে যায়। গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত পলিসি কনক্লেভে এসব কথা বলেন তিনি। ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শিরোনামে এ পলিসি কনক্লেভ হয়।
এদিকে খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর একটি বড় ভূমিকা রয়েছে মন্তব্য করে সারজিস বলেন, সব রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র এখানে থাকা দরকার ছিল। তাদের সদিচ্ছা ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতি জেনেটিক্যালি ঢুকে গেছে। সেজন্য দেশকে রাতারাতি বদলানো যাবে না।
তিনি বলেন, এটা আমাদের রাজনৈতিক কালচার। নতুন বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে খুনি হাসিনা বলতে পারি আমরা। সে সৎ সাহস আমাদের আছে।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে সারজিস আলম বলেন, এখন যারা উপদেষ্টা রয়েছেন তারা সবাই ভালো মানুষ। দুষ্কৃতকারীরা সবাই দ্রুত ভালো হয়ে যাবে বলে তারা মনে করছেন। কিন্তু সেটা নয়। আপনাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এদের সংস্কার করার জন্য।
তিনি বলেন, ২৪ জন উপদেষ্টা যদি ২৪টা সংস্কার করেন তাহলেই অনেক বড় পরিবর্তন হবে। এই প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি। শুধু সবার সদিচ্ছা দরকার।
সারজিস আরও বলেন, আমদানিকরণ প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণ করা জরুরি। কয়েকটি বৃহৎ কোম্পানি সবকিছু নির্ধারণ করে দেয়। সে ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক বাজার থেকে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক বাজারের দিকে যেতে হবে। সর্বোপরি সামগ্রিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বাজারে ভারসাম্য আনা যাবে।
বড় বড় কোম্পানি দেশের স্বার্থে অন্তত কিছু হলেও করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। সারজিস বলেন, তারা হাসপাতাল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমন কিছু করতে পারলে বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন মানুষ আপনাদের স্মরণ রাখবে। একইভাবে ব্যক্তিগতভাবে সৎ হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত লোভই সব অনিয়মের কারণ। এর থেকে বের হতে না পারলে আমরা একই চক্রের মধ্যে আবর্তিত হতে থাকব।