সাকিব আল হাসান যেন সুপারম্যান। আজ ঢাকা, তো কাল দুবাই। আজ মাঠে খেলছেন, তো কাল চলে যাচ্ছেন বিজ্ঞাপনের কোনও কাজে। সেটা ভিনদেশ হোক আর ভিন্ন কোন শহরে। গত কিছুদিন ধরে সাকিবের রুটিন এমনই। মাঠের বাইরে আর মাঠের ভেতরে তার ব্যস্ত সময় কাটছে। যদিও সবগুলো কাজই হচ্ছে যুতসই। অথচ এমন রুটিনে সাধারণ মানুষ হাঁপিয়ে উঠলেও সাকিব যেন নির্ভার।
ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেই সাকিব চলে যান দুবাইতে। সেখানে একটি স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করেন। হত্যা মামলার আসামী আরাভ খানের আমন্ত্রণে দুবাই যাওয়ার কারণে বেশ সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে তাকেজ। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার সেসব সমালোচনা গায়েই লাগাননি। ১৭ মার্চ প্রথম ওয়ানডের আগের দিন যান সিলেটে। এক বেলা অনুশীলন করে সাকিব আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামেন।
১৮ মার্চ প্রথম ওয়ানডে শেষে ১৯ মার্চ ঢাকায় ফিরে যোগ দেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর (এআইইউবি) ২১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সাকিব অর্জন করেন বিবিএতে গ্র্যাজুয়েশন। এরপর সিলেটে ফিরে সোমবার খেলেছেন দ্বিতীয় ওয়ানডে। ম্যাচটি খেলেই মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় ফেরেন। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত তৃতীয় ওয়ানডের আগে ফাঁকা সময়ে বিমান বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তি সম্পন্ন করেছেন তিনি।
এসব ভ্রমণক্লান্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিজ্ঞাপন, মাঠের ক্রিকেট, পরিবার, সামাজিক কার্যক্রম সবকিছু দারুণভাবে সামাল দিচ্ছেন সাকিব। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিক প্রশ্ন করেছেন সাকিব কীভাবে সামলান এত কিছু? হাসতে হাসতে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের উত্তর, ‘যে পারে সে সবই পারে।’ গত সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে বৃষ্টির বাধা পড়েছে। ৬ নম্বরে নেমে মুশফিকের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে ৩৪৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের ব্যাটিং শেষ হতেই বৃষ্টি নামার কারণে পরবর্তীতে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত না হওয়ায় কিছুটা হতাশ সাকিব, ‘জিতে গেলে অবশ্যই ভালো হতো। যারা ভালো খেলেছে, তাদের জন্য (ভালো লাগতো)। বিশেষ করে মুশফিক ভাইয়ের জন্য আমার মনে হয়। কিন্তু এটা হতেই পারে (বৃষ্টি)।’
বিমানের পণ্যদূত হওয়ার পর সাকিবকে প্রশ্ন করা হয়, ছোটবেলায় কখনও কি পাইলট হতে ইচ্ছা করেছিল। তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, ছোটবেলায় পাইলট হতে চাইতাম। ডাক্তারও হতে চেয়েছি, ইঞ্জিনিয়ারও হতে চেয়েছি। সবকিছু ক্রিকেটে শেষ হয়েছে।’
বিমান বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে গর্বিত সাকিব বলেছেন, ‘আজকে বিমানের অংশ হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত ও গর্বিত। সত্যি কথা বলতে যখন ছোটবেলায় খেলতাম বা বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিতাম তখন কোনও বিমান উড়ে গেলে আমরা বোঝার চেষ্টা করতাম এটা কোন দেশের এয়ারলাইন্স। আলহামদুলিল্লাহ আজকে বিমানের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে বিমান আরও ভালো অবস্থানে যাবে।’