ঢাকা মহানগরির ডেমরা থানার ওসি শফিকুর রহমান এবং এস আই সায়মুম এর বিরুদ্ধে কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরকে জোরপূর্বক থানায় নিয়ে দীর্ঘ সময় আটকিয়ে রেখে চাঁদাবাজি মামলায় জড়িয়ে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ওসির শাস্তি দাবি করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ওসির বিরুদ্ধে মানব বন্ধন করে সাংবাদিক মহল। মানব বন্ধনের সচিত্র প্রতিবেদন দেশের ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারিত হয়েছে। ওসি নিজেকে গোপালগঞ্জের লোক বলে পরিচয় দিয়ে দাপটের সাথে চলেন ও কাউকে পাত্তা দেন না মর্মে এলাকাবাসীদের অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট মনন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে প্রকাশ, ডেমরা থানাধীন পূর্ব বক্সনগর এলাকায় নাজাত মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার ঢাকা বিভাগীয় ক্রাইম রিপোর্টার হৃদয় ইসলাম চুন্নু, ক্যামেরা পার্সন ও ২১ বাংলা টিভির রিপোর্টার, সরোয়ার হোসেন, সাংবাদিক আল আমীন, সোহেলসহ চারজন পেশাগত কাজে পত্রিকা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উপস্থিত হন। উক্ত হাসপাতালটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এবং চিকিৎসার নামে প্রতারণা করেছ বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে হাসপাতালের ভুয়া ডাক্তারের নির্দেশে কিছু সন্ত্রাসী ধরণের লোক সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। তারা হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে সাংবাদিকদেরকে আঘাত করে। সাংবাদিকদের ব্যবহৃত গাড়ি ভাঙচুর করে। হামলায় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার সাংবাদিক হৃদয় ইসলাম চুন্নু আহত হন ও পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেস উল্লেখ করা হয়। হামলার সময় সাংবাদিকরা ডেমরা থানার ওসিকে ফোন করলে থানার এসআই সায়মুম ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো জোরপূর্বক ধরে থানায় নিয়ে যায়। এসআই সায়মুম সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে হাসপাতালের সন্ত্রাসীদের আক্রমনের ধারণ করা ভিডিও মুছে ফেলে। তারপর দীর্ঘ ৫ ঘন্টা আটকিয়ে রাখে, চাঁদাবাজির মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে। থানা থেকে সাংবাদিকরা নিজ নিজ অফিসে ফোন করে বিষয়টি জানালে ১৫ জন সাংবাদিকের একটি টিম থানায় পৌছেন। ওসির কামারায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ওসি শফিকুর রহমান দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও অন্যান্য সাংবাদিকেদেরকে নোংরা ভাষায় ও তুই তামারি করে গালিগালাজ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হামলার বিষয়ে ডেমরা থানায় মামলা করতে চাইলে ওসি মামলা না নিয়ে হয়রানি করে ও অকথ্য গালিগালাজ করে । ওসির অপেশাদারি আচরনের কারণে সাংবাদিকরা থানা হতে বের হয়ে আসেন ও পরবর্তী দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ও ওসি এবং এসআইর শাস্তি দাবি করে মানব বন্ধন করেন। হামলার শিকার দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার বিভাগীয় ক্রাইম রিপোর্টার হৃদয় ইসলাম চুন্নু ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ডেমরা থানার ওসি শফিকুর রহমান এবং এসআই সায়মুনের বিরুদ্ধে সিনিয়র সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মহা পুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ সদর দপ্তর, পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি, ঢাকা এবং উপ পুলিশ কমিশনার ওয়ারী জোন, ডিএমপি, ঢাকা বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। ডেমরা থানার ওসি লোক মারফত হৃদয় ইমলাম চুন্নুর নামে একাধিক মিথ্য মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন বলে জানান। এই ঘটনা মিডিয়া জগতে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে অভিযোগ রয়েছে কিছু সাংবাদিক নামধারী ও সোর্স থেকে সাংবাদিক হয়ে ডেমরা থানার ওসির পক্ষ নিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বেশ তৎপর হয়ে ওঠছে। শোনা যাচ্ছে, তারা ওসির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে ওসির গুনগান গাইছে এবং অভিযোগকারী সাংবাদিকের সাথে ওসির সমঝোতা ও মিটমাট হয়ে গেছে মর্মে অসত্য সংবাদ প্রকাশ করছে। কিছু সংবাদপত্রে
ওসির বিরুদ্ধে সাংবাদিকের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ওসির প্রতিবাদ ছাপানো হচ্ছে এবং ওসির কুকর্মকে ঢাকা দিচ্ছে। আইন অনুযায়ী পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া ওসি কোন পত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপাতে পারবে না। কারণ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টির তদন্ত চলমান। প্রকৃতপক্ষে ডেমরা থানার ওসির সাথে অভিযোগকারী সাংবাদিক ও ভুক্তভোগীদের মধ্যে কোন সমঝোতা হয় নাই।
সাংবাদিক হৃদয় ইসলাম চুন্নু ডেমরা থানার ওসির বিরুদ্ধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তা পুলিশের অতিরিক্ত উপ- কমিশনার, স্পেশাল অপারেশন টিম, গোয়েন্দা, মতিঝিল বিভাগ, ডিএমপি, ঢাকা কার্যালয়ে তদন্ত চলছে। গত ০৩-০৪-২০২৩ ইং ডিবি কার্যালয়ে বাদি ও সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।