তাঁর ছিল স্থির এক প্রত্যয় সামনে রেখে আলোকিত কর্মবলয়। ছিলেন আপসহীন ব্যক্তিত্বে সমুজ্জ্বল। কিন্তু সাহিত্য গগণে তিনি যে নক্ষত্রপ্রতিম তা আরও ঘটনাবহুল। সেখানে তিনি আরও উদার, আরও মানবিক। যে-কারণে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা ও সাহিত্য ভাবনা একসূত্রে গাঁথা। পঞ্চাশের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় দাঙ্গা বিরোধী একমাত্র ঐতিহাসিক গল্প সংকলন দাঙ্গার পাঁচটি গল্প প্রকাশ, একুশের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিকায় একুশের প্রথম সংকলন (১৯৫৩ সালের মার্চে প্রকাশিত) ‘একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পাদনা এবং সম্পাদনা ও তত্ত্বাবধানে মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর ষোল খ-ে স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিল পত্র প্রকাশ নিঃসন্দেহে তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। সে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমৃত্যু ছিলেন তিনি অটল। তাঁর মেধা ও শ্রমে এ দেশে সূচিত হয় আধুনিক সাহিত্যের এক স্বর্ণালী অধ্যায়, যা থেকে আজকের অগ্রযাত্রা শুরু। বলা হয়ে থাকে, আমাদের কবিতাকে পাঠকপ্রিয় করার ঐতিহাসিক দায়িত্ব যদি কাঁধে নিয়ে থাকেন কবি শামসুর রাহমান তবে তার সামাজিক দায়িত্বটি পালন করে গেছেন কবি হাসান হাফিজুর রহমান। তিনি সেখানে অগ্রনায়ক তো বটেই। অনেক অনেক ক্ষেত্রে হাতে কলমে শিক্ষাদাতাও অর্থাৎ তিনি এতটাই সাহিত্য মহৎপ্রাণ ছিলেন যে, ভেতরে সর্বদা কাজ করেছে একটা সমবায়ী চিন্তা অর্থাৎ সবাইকে নিয়ে দেশীয় সাহিত্য সংস্কৃতিকে চূড়ায় পৌঁছে দেয়া। এ জন্য সমসাময়িক, অনুজ ও অগ্রজ সবার কাছেই স্পষ্ট তাঁর বিরাটত্ব। মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সাহেবের বিখ্যাত ‘সওগাত’ পত্রিকা এ বঙ্গে পুনরায় চালুর পেছনে তাঁরই ছিল বড় ভূমিকা। তিনি সহকারী হিসেবে দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন কাঁধে। আর যেহেতু তিনি কবি তাই পত্রিকাটি ঘিরে গড়ে উঠেছিল সাহিত্যের নির্মল এক আড্ডা। যা থেকে পরবর্তীতে গঠিত হয় ‘পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ’ যার নেপথ্যে ছিলেন তিনি। এ রকম বহু সাহিত্য সংগঠনের নেপথ্য প্রাণশক্তি ছিলেন তিনি। ছিলেন তিনি কবি সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত স্বনামধন্য ‘সমকাল’ পত্রিকারও অন্যতম কা-ারি। সাহিত্যের পাশাপাশি পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন উঁচু স্তরের সাংবাদিক। তিনি অলংকৃত করেন ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদকের পদ। পালন করেন বিদেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস সচিবের দাযিত্বও।
এটি অবশ্য স্বাধীনতা উত্তর তাঁর আপসহীন সাংবাদিকতার জলন্ত এক স্বীকৃতি। তবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ এই তিনটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে তাঁর যে কাজ তা এক একটি মাইল ফলক। কারণ এই তিনটি ধাপের পর্যায়ক্রমিক উত্তরণের মধ্য দিয়েই ঘটে বাঙালি জাতিসত্তার স্বাধীন অভ্যূদয়। হাসান হাফিজুর রহমান ছিলেন মনে প্রাণে খাঁটি বাঙালি। স্বদেশপ্রেম ও ঐতিহ্যের প্রতি একনিষ্ঠ। তাঁর ভেতরে তাই?তৈরি ছিল বাঙালির আত্মাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী চেতনা, যে চেতনা থেকে সমাজ বদলের অঙ্গীকার। তাই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে দেশভাগের পর বাঙালির আত্মপরিচয়ের চাবিকাঠি স্বদেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে তাঁর ছিল স্মরণীয় ভূমিকা। তখন?বৈরি বাস্তবতায় তিনিই?তৈরি করেন ক্ষেত্রভূমি। শুধু নেতৃত্বে নয়, সৃজনেও তাঁর অবদান কালের চিহ্ন ও ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। যেমন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ওপর গল্প ‘আরও দুটি মৃত্যু’, ভাষা আন্দোলনের ওপর অবিনাশী কবিতা ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে ‘যখন উদ্যত সঙ্গীন’ কাব্যগ্রন্থ জ্বলন্ত স্বাক্ষরবাহী। ১৯৫০ সালে দাঙ্গা বিরোধী গল্প ‘আরও দুটি মৃত্যু’ দিয়ে শুরু হয় তাঁর বর্ণময় সাহিত্য জীবন। মাত্র ১৮ বছরের তরুণ বয়সে রচিত এই গল্পকে বিজ্ঞ ও বিদগ্ধজনেরা তখনই বলেছেন, অসাধারণ, দুর্দান্ত ও সময়োপযোগী। কিন্তু তিনি গল্পে নিজের প্রতিভার চূড়ান্ত বিকাশে না গিয়ে ‘বিমুখ প্রান্তর’-এ (প্রথম কবিতাগ্রন্থ) দাঁড়িয়ে কবিতার রংধনু ছড়ালেন?চৈতন্যে, থিতু হলেন কবিতারই আমূল ধ্যানে, খুঁজলেন কবিতার মধ্যেই জাতির অস্তিত্বের ক্রমধারা, জারিত করলেন আধুনিক মননবাহিত?চৈতন্যের সমবায়ী আলোক বার্তা। তাঁর প্রয়াসেই এদেশে উন্মোচিত হয় আধুনিক কবিতার উৎসমুখ। ফলে প্রথম কাব্যগ্রন্থেই তিনি যেমন মৌলিক এক কবিকণ্ঠ তেমনি স্বাতন্ত্র্যে চিহ্নিত। ‘বিমুখ প্রান্তর কাব্যগ্রন্থকে তাই টিএস এলিয়টের ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ (পোড়োজমি)-এর ভাবসম্পদ মনে করা হলেও এটি তথাকথিত জীর্ণ প্রেমাবেগ, অবক্ষয় লালন ও নিছক আত্মরতিমুক্ত এক অনন্য শিল্পফসল। জীবন ও সমষ্টি চেতনায় সেখানে কবি হাসান হাফিজুর রহমান যেমন সমাজ ও শেকড় সংলগ্ন তেমনি জীবন জিজ্ঞাসায় অগ্রসর এক মানস প্রতিভূ। তিনি বাংলা কবিতাকে স্বাধিকার প্রশ্নে ফিরিয়ে এনেছেন মূলে, নিজস্বতায় এবং সেই সঙ্গে দেখিয়ে গেছেন উত্তরণের পথটিও। তাঁর প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘আধুনিক কবি ও কবিতা’ তাই আজও সর্বশ্রেণির বাঙালি কবির জন্য শুধু নির্দেশনা নয়, অনুপ্রেরণাও। তিনি এ গ্রন্থে আধুনিক কবি ও কবিতার চুলচেরা বিশ্লেষণ, বিষয়, ভঙ্গি, ধরন ও স্বরচেতনার স্বরূপটি উন্মোচন করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আধুনিক কবিতা অগ্রসর মানব সভ্যতার ঐতিহ্যের নিবিড়তম সত্য, যা কবিতাকে অতি অভ্যস্ত বিহবলতা কাটিয়ে সজ্ঞান সচেতন ও তীক্ষ্ণধী করে তুলেছে এবং যা রোমান্টিক স্বভাবের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এর কবিতারস ও অভিজ্ঞান আকস্মিক চিৎকারে বিদীর্ণ নয়। এর যা কিছু নতুন তা হচ্ছে গতিশীল পৃথিবী থেকে বিরামহীন আহরণ, আর সেইসব অনুষঙ্গের অনায়াস ব্যবহারে বিচিত্র বিস্ময়কর কলাকুশলতা। অর্থাৎ কী টেকনিকে, কী বিষয় সচেতনতা, আধুনিক কবিতা ধারন করবে গতিশীল এক জীবনবাস্তবতা এবং তার প্রাণরসকে দেবে অভূতপূর্ব কাব্যময়তা। সেক্ষেত্রে কবিতায় নতুন বাঁক ফেরার ভেতরগত তাড়নার বিস্তার ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই যে সহজ ও চমৎকার নির্ণয় এজন্যেই এটি মহত্তম এক প্রয়াস। এই গ্রন্থের জন্য তিনি বহুদিন থেকে যাবেন কবি ও কবিতাপ্রেমিদের হৃদয়ে। একজন প্রকৃত কবির পক্ষেই সম্ভব কবিতার অন্তর্ছবিটি সহজে চিহ্নিতকরণ। সেই কাজটিই করেছেন হাসান হাফিজুর রহমান তাঁর অতুলনীয় ‘আধুনিক কবি ও কবিতা’ প্রবন্ধ গ্রন্থে। এ ক্ষেত্রে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি বহুমাত্রিক লেখক আবদুল মান্নান সৈয়দ। কবিতা সম্পর্কিত প্রবন্ধ, গবেষণা ও সমালোচনায় মান্নান?সৈয়দের অবদানও ঈর্ষণীয়। সেটা সম্ভব হয়েছে এ কারণে যে, দুজনেই ছিলেন পেশাগতভাবে বাংলার অধ্যাপক। তবে আশ্চর্য, সৃজনে তাঁদের অধ্যাপকীয় ছায়া নেই। হাসান হাফিজুর রহমান তাই কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, সমালোচক, অধ্যাপক, গবেষক, সংগঠক, সাংবাদিক ও কূটনীতিক বহুধা পরিচয়ের অধিকারী হলেও দৃঢ়ভাবে মনে করতেন কবি-ই তাঁর মূল পরিচয়, কবিতাই তাঁর আরাধ্য। কবি তিনি, স্বদেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ কমিটেট এবং প্রতিবাদী এক কবি। তাঁর এই প্রতিবাদ শুরু ভাষা আন্দোলনের রক্তঝরা অঙ্গীকার নিয়ে ‘অমর একুশে কবিতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে, যে কবিতার জন্য তিনি আজও কিংবদন্তি। স্বাধীনতার বীজমন্ত্র ছিল ঐ ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলন নিয়ে অনেকেই কবিতা লিখেছেন। তার মধ্যে কবি আলাউদ্দিন আল আজাদের ‘স্মৃতির মিনার’ আর হাসান হাফিজুর রহমানের ‘অমর একুশে’ কবিতা দুটিই কালের চিহ্ন বহন করে শ্বাশত হয়ে আছে। ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গ উঠলে এই দুটি কবিতা থেকেই টানতে হয় উদ্ধৃতি। যেমন,
হে আমার দেশ, বন্যার মতো
অভিজ্ঞতার পলিমাটি গড়িয়ে এনে
একটি চেতনাকে উর্বর করেছি
এখানে আমরা ফ্যারাউনের আয়ুর শেষ কটি বছরের
ঔদ্ধত্যের মুখোমুখি,
এখানে আমরা পৃথিবীর শেষ দ্বৈরথে দাঁড়িয়ে,
দেশ আমার, স্তব্ধ অথবা কলকণ্ঠ এই দ্বন্দ্বের সীমান্তে এসে
মায়ের স্নেহের পক্ষ থেকে কোটি কণ্ঠ চৌচির করে দিয়েছি :
এবার আমরা তোমার।
[অমর একুশে/ বিমুখ প্রান্তর]
উপর্যুক্ত কবিতাংশে মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বীকৃতির জন্য তিনি দেখিয়েছেন একটি প্রত্যয়ী চেতনার চূড়ান্ত ঐক্যের সুফল।
ভাষা আন্দোলনের স্বাধিকার সংগ্রামের পথ বেয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য পরিণতি অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। আর সেই রক্তাক্ত সংগ্রামের প্রেক্ষাপট জীবন্ত হয়ে আছে হাসান হাফিজুর রহমানের কবিতায়। যেমন :
শহরের আদিঅন্ত সাজানো চত্বরে আজকাল
কোটি কণ্ঠ একটি আওয়াজ হয়ে যায়
অযুত মানুষ একটি মানুষের মতো দুলে ওঠে।
স্বদেশের যতœ বহির্বাটি করে তছনছ
এপার ওপার করে একাকার বুঝি মেঘনার মতোই
খলবল শব্দ তোলে, মুহূর্তে বদলায় রঙ ভীষণ অনিশ্চিত
এই কি পরম বাংলা বেড়ি ভেঙ্গে আগলায় মহানদ,
তুড়িতে ফোটায় ফুল, উচ্চকিত পতাকায় নতুন জন্মের সংবাদ!
[স্বয়ং মেঘনার ঢল / যখন উদ্যত সঙ্গীন]
কিংবা
তোমাদের ঠোঁটে দানবের থু থু
স্তনে নখরের দাগ, সর্বাঙ্গে দাতারের ক্ষত চিহ্ন প্রাণান্ত গ্লানিকর।
লুট হয়ে গেছে তোমাদের নারীত্বের মহার্ঘ্য মসজিদ।
[বীরাঙ্গণা/যখন উদ্যত সঙ্গীন]
এখানে স্পষ্ট যে, নারীর লাঞ্ছনা ও এক রক্তাক্ত আত্মত্যাগের ফলে আমরা পেয়েছি একটি দেশ, একটি স্বাধীন পতাকা এবং আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জনেই যে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি, তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি উল্লেখিত কবিতায়। অর্থাৎ সামনে অপেক্ষা করে আছে বিপুল কাজ। আর সেটাই সামাজিক অঙ্গীকার। পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শোধ করতে হবে সেই দায়। এই দায়িত্ববোধই জড়িয়ে আছে হাসান হাফিজুর রহমানের যুদ্ধপূর্ব ও যুদ্ধোত্তর নানা কবিতায়। এখানে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে রচিত তাঁর ‘বিমুখ প্রান্তর’ ও ‘যখন উদ্যত সঙ্গীন’ কবিতাগ্রন্থ দুটিকে তাই মনে করা বাঙালির আত্ম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ও উজ্জ্বল ইশতেহার। ব্যক্তি বিশাল তার সামাজিক সমগ্রতায়। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কবি হাসান হাফিজুর রহমান। তাঁর সমগ্র জীবনই আবর্তিত স্বদেশ, সমাজ ও সংগ্রামী অবহেলিত মানুষের জীবন বাস্তবতার বিশ্বস্ত রূপদানে। তাদের স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের দুই বিপরীত বাস্তবতার অপূর্ব গ্রন্থনা তাঁর এক একটি কাব্যগ্রন্থ : ‘বিমুখ প্রান্তর’ (১৯৬৩), ‘অন্তিম শরের মতো’ (১৯৬৮), ‘আর্ত শব্দাবলী’ (১৯৬৮), ‘যখন উদ্যত সঙ্গীন’ (১৯৭২), ‘বজ্রেচেরা আধাঁর আমার’ (১৯৭৬), ‘শোকার্ত ‘তরবারি’ (১৯৮২), ‘আমার ভেতরের বাঘ’ (১৯৮৩), ‘ভবিষ্যতের বাণিজ্য তরী’ (১৯৮৩)।
কাব্যগ্রন্থের নামেই ভেসে ওঠে সময়ের ছবি। আর সেই ছবি চিত্রণে ও অন্তর্ভাষ্য বয়ানে তিনি শুধু একজন যথার্থ আধুনিক কবিই নন, আমাদের কাছে হয়ে ওঠেন সামাজিক ও রাজনৈতিক এক ভাষ্যকারও। সমাজ ও সাহিত্য অভিন্ন ভাবতেন বলেই তাঁর কবিতার মূল্যায়ণে জোর দিয়ে বলতে চাই তিনি ‘সামাজিক অঙ্গীকারের কবি’। কিন্তু তিন দশক (১৯৫০-১৯৮৩) অধিককালের সাহিত্য ও কর্মময় জীবনে স্বদেশ ও সমাজের জন্য বিপুল অবদানে তাঁর প্রাপ্তি সামান্যই। সেই আক্ষেপেই হয়তো তিনি বলেছেন, আমরা শহীদ নিয়ে মাতামাতি করি, বীরের সম্মান দিতে জানি না।যখন একদিন শোক সভায় উঠব আমি,
করতালিতে নয়, অবিরাম দীর্ঘশ্বাসে
মুহূর্তেই জান্তব হয়ে যাবো ফের।
মড়া ছাড়া তোমাদের কিছুই রোচে না
তোমাদের হিসেবী খাতায়
বীর নেই, শহীদ রয়েছে শুধু।
বীর নেই, আছে শহীদ/ আমার ভেতরের বাঘ
তাঁর এই আক্ষেপকে যথার্থই মনে করি। কারণ তিনি নিজেকে অতিক্রম করে গেছেন। আমরা রয়ে গেছি বামন। যদি সাহিত্য অভিভাবক বলি তবে তিনি ছিলেন এদেশের বুদ্ধদেব বসু। সাহিত্য সংকট উত্তরণে যুগ যুগ ধরেই দরকার একজন হাসান হাফিজুর রহমান। ( সূত্র: বিডিনিউজ২৪.কম)