বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, ‘অনেকেই মনে করছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হুবহু থাকবে। কারও দাবি, বাতিল করতে হবে। আবার কেউ বলছেন, এটা সংশোধন করতে হবে। আমি মনে করি, এই আইনের প্রয়োজন আছে। তবে এ আইনের মিসইউজ (অপপ্রয়োগ) হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আয়োজিত ‘প্রেস কাউন্সিল আইন ১৯৭৪ ও তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অবহিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নিজামুল হক বলেন, ‘এই আইনের (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) সবচেয়ে বড় সমালোচনা হচ্ছে এর অধিকাংশ ধারাই জামিন অযোগ্য। তবে জামিন অযোগ্য মামলায় জামিন দেওয়া যাবে না এটা সব ক্ষেত্রে ঠিক নয়। এটা কোর্টের অথরিটি (কর্তৃত্ব)। বিচারক সাহেব জামিন দিতেও পারেন, না–ও পারেন। আমি আশা করব, যাঁরা এই আইনটি প্রয়োগ করবেন, তাঁরা যেন মানুষ হয়রানির শিকার হয়, এমন আদেশ না দেন।’ সারা দেশের সাংবাদিকদের তালিকা করা হবে এবং এটি চলমান প্রক্রিয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সারা দেশের সাংবাদিকদের তালিকা করা একটু সময়সাপেক্ষ হলেও এ প্রক্রিয়ায় প্রকৃত সাংবাদিকেরা বেরিয়ে আসবেন। ডেটাবেজ তৈরির জন্য এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২২টি জেলার সাংবাদিকদের তালিকা পাওয়া গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নিজামুল হক বলেন, যাঁরা সাংবাদিকতা করবেন, তাঁদের প্রথম পেশা সাংবাদিকতাই হতে হবে। দ্বিতীয় পেশা অন্য কিছু হতে পারে। যিনি সাংবাদিকতা করবেন, তাঁকে মিনিমাম গ্র্যাজুয়েট হতে হবে বা সাংবাদিকতায় পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রেস কাউন্সিল আইন ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, নীতিমালা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অপেশাদারি ও অপসাংবাদিকতা, সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা, নিরাপত্তাসহ সাংবাদিকদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন নওগাঁর সাংবাদিকেরা। নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. মাসুদ খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান প্রমুখ।