রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন

সাজা ঘোষণার তিন মাসেও অধরা হেলেনা জাহাঙ্গীর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তিন মাস আগে প্রতারণার মামলায় দুই বছরের কারাদ-ের আদেশ দেন আদালত। মামলা চলাকালে আগে আদালতে হাজিরা দিলেও রায় ঘোষণার দিন তিনি উপস্থিত হননি। ফলে রায় ঘোষণার দিন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকলেও এখনো অধরা হেলেনা জাহাঙ্গীর। যদিও পুলিশ বলছে, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে খুঁজছে তারা। পেলেই গ্রেফতার করা হবে।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের গ্রেফতারি পরোয়ানা গত ২ এপ্রিল আদালত থেকে গুলশান থানায় পাঠানো হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানার নম্বর- ৩৮২৬। এ বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিএম ফরমান আলী জাগো নিউজকে বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় একটা গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। তাকে খুঁজছি, পেলেই ধরে ফেলবো। গত ২০ মার্চ ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের দুই বছর করে কারাদ-ের আদেশ দেন আদালত। কারাদ-ের পাশাপাশি সবাইকে দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও দুই মাসের কারাভোগ করতে হবে। দ-প্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা খাতুন, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার।
রায় ঘোষণার সময় হেলেনা জাহাঙ্গীর ও হাজেরা খাতুন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেদিন অন্য তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, সংবাদকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ সংগ্রহ করে রাষ্ট্রকে সহায়তা করে চলেছেন। এই পেশায় নিয়োজিত মফস্বল শহরের সাংবাদিকরা অনেক ক্ষেত্রে কম পারিশ্রমিকে কাজ করে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রেই তারা রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ ও পেশার প্রতি ভালোবাসা থেকে এই কাজ করেন। এ অবস্থায় সম্প্রচারের অনুমোদন ছাড়াই ‘জয়যাত্রা টিভি’ নিজেদের আইপি বা স্যাটেলাইট টিভি উল্লেখ করে সংবাদকর্মী নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর সংবাদকর্মী নিয়োগ করে এবং তাদের থেকে যে জামানত ও মাসিক চাঁদা আদায় করেছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, জয়যাত্রা টিভি বাংলাদেশ সরকার থেকে সম্প্রচারের অনুমোদন না নিয়েই স্যাটেলাইট টেলিভিশন হিসেবে প্রচার করে সংবাদকর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার স্থানীয় সংবাদকর্মী ও বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে তাদের থেকে জামানত ও চাঁদা আদায় করেছে। সম্প্রচারের অনুমোদন ছাড়া ‘জয়যাত্রা’ টেলিভিশন হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
২০২১ সালের ২ আগস্ট রাতে পল্লবী থানায় সাংবাদিক আব্দুর রহমান তুহিন বাদী হয়ে একটি প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় জয়যাত্রা টিভির চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর, জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা খাতুন, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী, স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ারসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদী তুহিন অভিযোগ করেন, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভোলা জেলার আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা। প্রতিবেদক হিসেবে তিনি কয়েক মাস কাজ করলেও কোনো বেতন পাননি। অন্যদিকে তার কাছ থেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা নেয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইড) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন দ-বিধি ৪২০/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ২৬ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com