ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর প মটি হলো হজ। ঈমান, নামাজ, জাকাত ও রোজার পরই হজের অবস্থান। হজ মূলত কায়িক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর হজ পালন করা ফরজ। এর গুরুত্ব যেমন অপরিসীম তেমনি ফজিলতও সীমাহীন।
ইবনে উমর রা: থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘নিজের ঘর থেকে কাবার উদ্দেশে তোমার বের হওয়াতে, তোমার সওয়ারির প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময়ে আল্লাহ একটি করে সওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন এবং একটি করে পাপ ক্ষমা করবেন। আরাফায় অবস্থানকালে আল্লাহ নিচের আসমানে নেমে আসেন এবং তাদেরকে (হাজীদেরকে) নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন। বলেন, ‘আমার ওই বান্দারা আলুথালু কেশে ধুলামলিন বেশে দূর-দূরান্ত পথ অতিক্রম করে আমার কাছে এসে আমার রহমতের আশা করে এবং আমার আজাবকে ভয় করে, অথচ তারা আমাকে দেখেনি। যদি তারা আমাকে দেখত, তাহলে কী করত?’ সুতরাং তোমার যদি বালির পাহাড় অথবা পৃথিবীর বয়স অথবা আকাশের বৃষ্টি পরিমাণ গুনাহ থাকে, আল্লাহ তা ধুয়ে দেবেন। পাথর মারার সওয়াব তোমার জন্য জমা থাকবে। মাথা মু-ালে প্রত্যেক চুলের বিনিময়ে একটি করে সওয়াব লিখা হবে। অতঃপর কাবাঘরের তাওয়াফ করলে তুমি তোমার পাপরাশি থেকে সেই দিনের মতো বের হবে, যেদিন তোমার মা তোমাকে জন্ম দিয়েছিল’ (তাবারানি-১৩৩৯০, সহিহুল জামে-১৩৬০)। অপর এক রেওয়ায়েতে এসেছে, রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা হজ ও উমরাহ একটির পর অপরটি আদায় করবে; কেননা তা অভাব ও পাপ এমনভাবে দূর করে দেয়, যেরূপ হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে থাকে। আর মাবরুর হজের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়’ (নাসায়ি-২৬৩১)।
হজ করার সামর্থ্য ও সক্ষমতা অর্জিত হওয়ার পরও হজ আদায় না করার পরিণতি ভয়ঙ্কর। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম হওয়ার পরও যদি কোনো ব্যক্তি হজ না করে, তাহলে তার ঈমানহারা হয়ে মৃত্যুবরণ করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। হজরত আলী রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছার মতো সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হজ না করে, তবে সে ইহুদি হয়ে মারা যাক বা খ্রিষ্টান হয়ে মারা যাক, তাতে আল্লাহর কোনো ভাবনা নেই। কেননা, মহান আল্লাহ তাঁর কিতাবে বলে দিয়েছেন, মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের জিয়ারত করা তার অবশ্য কর্তব্য’ (তিরমিজি-৮১২)। লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম, নতুনবাগ, রামপুরা, ঢাকা