চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে রাশিয়া। এরপরই তারা জানায়, এখন থেকে ইউক্রেনীয় বন্দরগামী যেকোনো জাহাজকে সামরিক জাহাজ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আর এতেই শস্যবাহী জাহাজ চলাচল কমে যাওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাড়তে শুরু করেছে গমে ও ভুট্টার দাম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপীয় স্টক এক্সচেঞ্জে বুধবার (১৯ জুলাই) গমের দাম আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এতে প্রতি টন গম বিক্রি হচ্ছে ২৫৩ দশমিক ৭৫ ইউরোতে। অন্যদিকে, ভুট্টার দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। গমের দাম বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। দেশটিতে এক লাফে গমের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর এটিই একদিনে এ শস্যের সর্বোচ্চ দামবৃদ্ধি।
ইউক্রেন থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানি চালু রাখতে গত বছরের জুলাইয়ে এগিয়ে আসে জাতিসংঘ ও তুরস্ক। তাদের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শস্যচুক্তি হয়। তিন দফা বাড়ানোর পর ১৭ জুলাই শেষ হয় চুক্তির মেয়াদ। রাশিয়া এ দফায় আর মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়নি। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কৃষ্ণসাগর চুক্তি শেষ হওয়ায় সমুদ্রের মানবিক করিডোর বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে ২০ জুলাই রাত ১২টা থেকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের বন্দরের দিকে যাওয়া সব জাহাজকে সামরিক জাহাজ বলে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া জাহাজে যেসব দেশের পতাকা দেখা যাবে, তাদেরকে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে ইউক্রেন সংঘাতে জড়িত বলে বিবেচনা করা হবে।
পুতিনের এ হুমকির পর বেসামরিক জাহাজে হামলায় ইউক্রেনকে দোষারোপের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনে হোয়াইট হাউজ। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তার দাবি পূরণ হলে অবশ্যই তিনি শস্যচুক্তিতে ফিরবেন। রাশিয়া যখন ইউক্রেনের সঙ্গে এ চুক্তি করে, তখন শর্ত ছিল— তাদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য ও সার বিনা বাধায় আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে দিতে হবে ও কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। রাশিয়া দাবি করছে, তাদের ওই দাবিগুলো এখনো পূরণ করা হয়নি। তাই তারা নতুন করে আর চুক্তি নবায়ন করবে না। যুদ্ধ শুরুর পরই রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ফলে এখন দেশটি চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য আন্তর্জাতিক বাজারে আর যেতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সূত্র: বিবিসি