বংশাল ও সূত্রাপুর থানায় সালাম-নিপুণের বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকার চার প্রবেশমুখে বিএনপি-পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১টি মামলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাগুলো করেছে। এসব মামলায় বিএনপির এজাহার নামীয় আসামির সংখ্যা ৪৬৯ জন। আসামিদের সবাই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। এসব মামলায় আরও ৮০ জন নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতনামা হিসাবে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় ২টি মামলায় এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ৩১ জন, উত্তরা পূর্ব থানায় ৩টি মামলায় আসামি ১০০ জন, কদমতলী থানায় ১টি মামলায় আসামি ৭০ জন, যাত্রাবাড়ী থানায় ২টি মামলায় আসামি ২১৮ জন, সূত্রাপুর থানায় ১টি মামলায় ২৫ জন , বিমানবন্দর থানায় ১টি মামলায় ৮০ জন, বংশাল থানায় ১টি মামলায় ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি আসামিদের অজ্ঞাত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ১১ মামলার মধ্যে ১০টি পুলিশের ওপর হামলা ও ১ টি বাস পুড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩টি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বংশাল ও সূত্রাপুর থানায় সালাম-নিপুণসহ বিএনপির ৪৪৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা: ঢাকার প্রবেশমুখে শনিবার (২৯ জুলাই) বিএনপির ডাকা অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের অভিযোগে রাজধানীর বংশাল ও সূত্রাপুর থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। এ মামলায় বিএনপির ৪৪৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সূত্রাপুরের মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ ২৪ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ৩০০ থেকে ৪০০ নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে বংশাল থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বংশাল থানায় দায়ের করা মামলার আসামি ২৫ জন। মামলা নম্বর ৬৩। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি আরো অনেকে। রোববার (৩০ জুলাই) বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালবাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।
সূত্রাপুরের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শনিবার ধোলাইখাল গোয়ালঘাট নাসির উদ্দিন সর্দার লেনের মনসুর মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করেন এবং যানচলাচলসহ সাধারণ জনগণের চলাচলের বিঘœ সৃষ্টি করতে থাকেন।
এ সময় বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর রায় চৌধুরী, নিপুণ রায় চৌধুরী ও ইশরাক হোসেনদের অনুমতিবিহীন অবস্থান কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার অনুরোধ করে পুলিশ। নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলার একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার সময় নিপুণ রায় চৌধুরীর নির্দেশে এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিসহ আশপাশে থেকে আসা অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে কিন্তু অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিশৃঙ্খলাকারী আসামিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেলসহ সাথে নিয়ে আসা প্লাস্টিকের শক্ত পাইপ, কাঠের লাঠি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে সূত্রাপুর থানায় কর্মরত এসআই মো: নাহিদুল ইসলামের ওপর প্লাস্টিকের শক্ত পাইপ, কাঠের লাঠি ও ইট-পাটকেল এলোপাথাড়িভাবে নিক্ষেপ করায় হেলমেট খুলে যায় এবং মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। সরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষার্থে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এপিসিসহ ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা উচ্ছৃঙ্খল আসামিরা বিভিন্ন দিক থেকে পুলিশের ওপর হিংস্র ও আক্রমণত্মাকভাবে চড়াও হয়ে ইট-পাটকেল ও একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন এবং আশপাশের দোকান ও বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে দোকান ও বাড়িঘরের ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ সরকারি সম্পত্তি, জানমাল রক্ষার্থে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যদের ইস্যুকৃত অস্ত্র শর্টগানের কার্তুজ ও গ্যাসশেল নিক্ষেপ করে।