জেলার মধুপুরে এবার আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। তবে গত তিন বছরের তুলনায় দাম অনেক কম। তাই লোকসানের আশঙ্কায় আছেন চাষিরা। আমসহ অন্যান্য মৌসুমী ফল বাজারে থাকায় আনারসের চাহিদা কিছুটা কম। তবে বাজারে অন্যান্য ফলের আমদানি কমতে শুরু করেছে, তাই আনারসের মূল্য সামনে বাড়বে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের। কৃষকদের লোকসান হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে আনারস উৎপাদনের অন্যতম স্থান হলো টাঙ্গাইলের মধুপুরের পাহাড়ী লাল মাটি। এবার এ উপজেলার ৬ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ১৪০ হেক্টর বেশি। এবার ৪ হাজার ৮৮ হেক্টরে জায়েন্ট কিউ, ২ হাজার ৭৪০ হেক্টরে হানিকুইন এবং নতুন জাতের এমডি-২ আনারস চাষ হয়েছে ১২ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত কয়েক বছরের মতো এবারও ফলন ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকেরা আনারস বিক্রি করতে আনছেন পাইকারি বাজারে। কিন্তু দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। মধুপুরের আনারস মূলত গারো বাজার ও জলছত্র পাইকারি বাজার থেকে সারা দেশে সরবরাহ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকার চাষিরা এ দুই বাজারেই পাইকারি দরে আনারস বিক্রি করেন। বিভিন্ন অ ল থেকে ব্যবসায়ীরা এসে আনারস নিয়ে যান।
সরেজমিনে গারো বাজারে দেখা যায়, সাইকেল, রিকশা, ভ্যানসহ নানা যানবাহনে চাষিরা বাগানের আনারস আনছেন বাজারে। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা আনারস কিনছেন। এ বাজারের আনারস ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। এবার মৌসুমের শুরুতে কোরবানির ঈদ ছিল। ঈদের কারণে সাধারণ মানুষের অনেক খরচ হয়ে গেছে। তাদের হাতে টাকা কম। তাই আনারসের চাহিদাও কম। সামনে আরও দুই মাস আনারসের মৌসুম আছে। তখন আনারসের দাম বাড়তে পারে। মহিষমারা গ্রামের আনারস চাষি আনসার আলী বলেন, গত বছর যে আনারস ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় (প্রতিটি) বিক্রি হয়েছে, এবার সেটি ১৫ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এবার শ্রমিকের মজুরিসহ উৎপাদন খরচ আগেরবারের চেয়ে বেড়েছে। মানভেদে প্রতিটি আনারসের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। তাই কৃষকেরা খুব বেশি লাভ করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, অন্যান্য মৌসুমী ফল শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই আনারসের চাহিদা বাড়ছে। আগামী দিনে আনারসের দাম বাড়বে। এতে কৃষক লাভবান হতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।