যাকে চুমু দিয়ে এতবড় বিপদে পড়লেন সেই জেনি হারোমাসাই মামলা করে বসলেন স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট লুইস রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে। নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে পুরস্কার বিতরণী মে ই স্পেনের নারী ফুটবলার জেনি হারমোসোকে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁকে চুমু খেয়ে বসেন স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান লুইস রুবিয়ালেস। ওই ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। ফিফা থেকে তদন্ত শুরু হয়। তাকে বলা হয় স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে। ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রুবিয়ালেস তখন বলেছিলেন, চুমুর বিষয়টি ছিল পারস্পরিক, স্বতঃস্ফূর্ত ও উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। তবে, এতদিন এ ঘটনায় জেনি হারমোসোকে মনে করা হচ্ছিল তিনি রুবিয়ালেসের পক্ষেই রয়েছেন। কিন্তু এখন সেই নারী ফুটবলার নিজেই মামলা করলেন স্পেন ফুটবল প্রধানের বিপক্ষে। মঙ্গলবার স্পেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি। নতুন করে আনা এই অভিযোগের অর্থ হলো, ৪৬ বছর বয়সী রুবিয়ালেস ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হতে পারেন। স্পেনের কৌঁসুলি অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কৌঁসুলিরা রুবিয়ালেসের বিপক্ষে খুব দ্রুতই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনবেন। হারমোসো এ ঘটনায় ‘যৌন নির্যাতন’র শিকার হয়েছেন কি না, তা নিয়ে গত ২৯ আগস্ট কৌঁসুলিরা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। কৌঁসুলি অফিসের এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, অসম্মতিতে চুমু দেওয়ায় রুবিয়ালেসের জরিমানা থেকে ৪ বছরের জেল হতে পারে। তবে হারমোসো রুবিয়ালেসের দাবি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, লুইস রুবিয়ালেস তার বক্তব্যে যা যা দাবি করেছেন, বিশেষ করে সম্মতিসূচক চুমুর ব্যাপারটি- তার সঙ্গে এমন কোনো কথাবার্তাই হয়নি। এগুলো মিথ্যা এবং নিজের সুবিধার জন্য কাউকে নিয়ন্ত্রণ করার যে সংস্কৃতি তিনি গড়ে তুলেছেন, সেটারই অংশ।’
রুবিয়ালেস অবশ্য পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে বলেছিলেন, ‘আমাকে স্বীকার করতেই হবে, আমি সম্পূর্ণ ভুল ছিলাম। আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে, এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমাকে বুঝতে হবে, যখন সভাপতি সভাপতির মতো দায়িত্বে থাকবেন, আপনাকে আরও সতর্ক হতে হবে।’
কিন্তু ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। রুবিয়ালেস পদত্যাগ না করলে নারী জাতীয় দলে খেলবেন না- এ দাবিতে স্পেনের ৮১ ফুটবলার ধর্মঘটের ডাক দেন। রুবিয়ালেসের মা সন্তানের পাশে দাঁড়িয়ে অনশন করেন স্পেনের এক গির্জায়। তার আগে ফিফা রুবিয়ালেসকে ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞাও দেয়। এবার ফৌজদারি মামলারও মুখোমুখি হতে পারেন রুবিয়ালেস।