চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এখন শুভ্রতা ছড়াচ্ছে শরতের কাশফুল। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোড, উপজেলার নোয়াগাঁও, রাজঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় নৈসর্গিক সৌন্দর্যে অনন্য শরতে বাতাসে দোল খাওয়া কাশফুল কেবলই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। কাশফুলের বালুচরের বির্স্তীণ এলাকাজুড়ে মাথা উঁচু করে দোল খাচ্ছে শুভ্র সাদা কাশফুল। কাশবনে কাশফুল ফোটে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে প্রাণ-প্রাকৃতিতে। ছড়ার পাশে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এখন কাশফুলের শুভ্র চাদরে ছেয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে ভানুগাছ সড়কের পাশে বেলতলী সংলগ্ন ভুড়ভুড়িয়া ছড়ার পাশে কাশফুলের বালুচরের অবস্থান। ভানুগাছে যাওয়ার রাস্তা ধরে খানিকটা সামনে এগোলেই (বিটিআরআই সংলগ্ন) উঁচু-নিচু টিলার মধ্যে চা বাগান। সবুজ চা বাগানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। ছড়ার দু’পাশেই প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়েছে এই কাশফুলের বালুচর। অপরূপ সাদা কাশফুলের বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য মনোরম। এমন নয়নাভিরাম সৌন্দর্য যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে পর্যটকসহ প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের। প্রতিদিন প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণে মুখরিত ভানুগাছ সড়কের কাশফুলের বালুচর। আর প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটছে অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে আসছেন। কেউবা আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছেন কাশবনে। কেউ তুলছেন ছবি। কেউবা হাত বুলিয়ে নিচ্ছেন কাশফুলে। বিটিআরআই সংলগ্ন ছড়ার পাশে বালুচরের কাশবনে কাশফুল দেখতে এসেছেন রাকিব, রাজু, রায়হান, মিতালী, পারমিতা। তাদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, শরৎ ঋতুর কথা মনে এলেই আমাদের চোখের কোণে ভেসে উঠে ফুটন্ত সাদা কাশফুল। তা স্বচক্ষে দেখতেই আসা। কাশফুলের বালুচরে অপরূপ সাদা কাশফুলের বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য দেখতে কতইননা মনোরম। এমন নয়নাভিরাম সৌন্দর্য এবং কাশফুলের হেলেদুলে থাকার দৃশ্য অপূর্ব। আরেক দর্শনার্থী দীপ বুনার্জি বলেন, ঋতু পরিক্রমায় বাংলার প্রকৃতিতে এখন শরৎকাল। রাশি রাশি কাশফুল ছড়াচ্ছে শ্বেত শুভ্র নৈসর্গিকতা। যা মুগ্ধ করছে প্রকৃতি প্রেমীদের। কাশফুল দেখতে আসা মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, ঋতু পরিক্রমায় এখন শরৎকাল। তার উপস্থিতির জানিয়ে দিচ্ছে নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা। এ দিকে কাশফুল তার অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে, আর এই সৌন্দের্য উপভোগ করতেই এখানে আসা। শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের বর্মাছড়া চা বাগানের ভেতরে ছড়ার সংলগ্ন বিশাল কাশবনে ফুটেছে কাশফুল। কাশফুল দেখতে আসা স্থানীয় ট্যুর গাইড শ্যামল দেব বর্মা বলেন, দিগন্ত জোড়া কাশফুলের মনোরম দৃশ্য মানব মনকে করে তোলে আন্দোলিত ও প্রফুল্ল। কাশবন শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, এর রয়েছে নানা ঔষধি গুণও। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের উঁচু স্থানে কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই কাশফুল বেশি দেখা যায়।