শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন

ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের সাততলা থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের সাততলা থেকে পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম কাজী ফিরোজ। তিনি ২০১৯-২০ সেশনের বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ও চাইনিজ ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড কালচার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে তাঁর সহপাঠীরা আহত অবস্থায় মেডিকেলে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লকে রাত ১টার সময়ে কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পান শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে, বিষয়টি নজরে রাখছি। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর কক্ষে গিয়ে একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়। যেখানে ১৯.০৯. ২৩ তারিখ উল্লেখ করে লেখা, ‘মানুষ বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের সামনে আমার যেহেতু সম্মান নাই, এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আমার কোনো অধিকার নাই। আমার মৃত্যুর দায়ভার একান্ত আমার। সরি মা! বাড়ি থেকে তোমাকে দিয়ে আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে হতাশ।’
ঢাকা মেডিকেলের মর্গে বন্ধু রাজু শেখ বলেন, ফিরোজ রাতে হলের ক্যানটিনে খাওয়া দাওয়া করেন। এরপর কয়েকজন রুমমেটকে জিজ্ঞাসা করেন কেউ তার কাছে টাকা পয়সা পায় কিনা এবং কাগজ কলম নিয়ে কি যেন লিখতে শুরু করে। রাতে জানতে পারি, ফিরোজ তার হলের পাশেই জিয়াউর রহমান হলের সাততলা থেকে লাফিয়ে পড়ে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাজু শেখের ধারণা, প্রেমঘটিত কারণে ফিরোজ আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তিনি জানান, কুয়েত মৈত্রী হলের এক সহপাঠীকে পছন্দ করতেন ফিরোজ। ফিরোজের বড় ভাই ফেরদৌস কাজী বলেন, ‘আমি এলাকার একটি কলেজে অনার্স পড়তাম। ফিরোজ ঢাবিতে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়ায় আমার আর পড়াশোনার সুযোগ হয়নি। পরিবার অসচ্ছলতার কারণে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানে চাকরি নেই। অনেক কষ্ট করে ফিরোজকে পড়াশোনা করাচ্ছিলাম। সেই ভাই এভাবে মারা গেল।’ ফেরদৌস কাজী জানান, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পুখরিয়া গ্রামে। বাবা চুন্নু কাজী কৃষি করেন। মা আনোয়ারা বেগম গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফিরোজ ছিলেন দ্বিতীয়। ঢাবির জিয়াউর রহমান হলে থাকতেন। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুনুর রশীদ সরদার বলেন, গতরাতে বিজয় একাত্তর হলের সাততলার বারান্দা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে ওই শিক্ষার্থী। সহপাঠীরা ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে মারা যায়। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com