গণতন্ত্রহীনতার কারণে পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোট নেতারা। তারা বলেছেন, এ সরকারের প্রতি পশ্চিমাবিশ্বসহ কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সমর্থন নেই। এসব রাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অবাধ নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের শঙ্কা ও গণতন্ত্রহীনতার কারণে এ গণতন্ত্রকামী রাষ্ট্রগুলো আসন্ন নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না বলে তারা জানিয়ে দিয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগর পানির টাংকির সামনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জোট নেতারা এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিজয়নগর থেকে শুরু হয়ে নাইটিংগেল মোড় ঘুরে পুরানা পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ১২দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম বীরপ্রতীক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বি এম এল) এর চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল (জাগপা)এর সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম শিকদার প্রমুখ।
জোট নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই গণতন্ত্রকে হিমঘরে পাঠায়। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাই ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, অথচ একদলীয় বাকশাল গঠন করে আওয়ামী লীগ সেই চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
নেতারা বলেন, ১৫ বছর ধরে আবারও অঘোষিতভাবে বাকশাল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত দুইবারের মতো এবারও যদি আওয়ামী লীগ বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ চালানোর সুযোগ পায় তাহলে দেশে পুরোপুরি বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে, দেশে গণতন্ত্র চিরদিনের জন্য বিদায় নেবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, শেখ হাসিনা আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকা যাবে না বলে দম্ভোক্তি করেছিল কিন্তু যখন দেখলো পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে তখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একদিনের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে সেখানে নানাভাবে তদবির করে আমেরিকাকে ম্যানেজ করতে সপ্তাহ পার করে দিচ্ছে। আমরা বলতে চাই এতে কোনো লাভ হবে না, বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেছে, শেখ হাসিনা আপনি এবারে খেলা বন্ধ করুন।
জনগণের দাবির কাছে নতি স্বীকার করে সম্মানজনকভাবে বিদায়ের উপায় বের করুন। আপনার সময় শেষ। আপনি বিনাভোটের নির্বাচনে আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। বিক্ষোভ মিছিলের শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।